শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করা ছয়টি পোশাক কারখানার (গার্মেন্টস) পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
Advertisement
সোমবার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি নিয়ে সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজ আমরা স্পেসিফিক ছয়টি পোশাক কারখানা নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা ডিফল্টার (বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ) হয়েছে এবং প্রতিজ্ঞা করেছে যে, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে। কোথা থেকে পরিশোধ করবে সে প্রশ্নটি নিয়ে এসেছেন। আমরা বলেছি সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর কোনো টাকা দেবো না। তারা কীভাবে দেবেন সে সিদ্ধান্ত তারা নেবেন।
তিনি বলেন, অনেক মালিক নেই। কেউ বলেন আইসিইউতে, আছে বিদেশে। কেউ বলেন, কোথায় আছে কেউ জানে না। আমরা প্রত্যেকের নামে রেড অ্যালার্ট জারি করার জন্য আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাচ্ছি।
Advertisement
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, টিএনজেড, মাহমুদ ডেনিম, স্টাইল ক্র্যাফট, ডার্ড গ্রুপ, জেনারেশন নেক্সট ও রোয়ার ফ্যাশন- এই ছয়টি পোশাক কারখানা পরিষদে ব্যর্থ হয়েছে। ঈদের আগ পর্যন্ত এসব কারখানা ঘিরেই অসন্তোষ ছিল।
'বেশির ভাগ মালিকই পলাতক। মালিক, মালিকের বউ, মালিকের ছেলে, কেউ নেই। আমরা সেজন্য রেড অ্যালার্ট দেওয়ার কথা বলেছি। কাল-পরশুর মধ্যে আপনারা জানবেন কার কার নামে রেড অ্যালার্টের জন্য বলা হয়েছে।'
তিনি বলেন, ছয়টি কারখানার সমস্যা আমরা নিরসনের চেষ্টা করছি। এটা সম্পূর্ণ মালিকের, ব্যবসা করেন ওনারা, টাকা নেন ওনারা, তারপর আসেন সরকারের কাছে। সরকার তো এই ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ করেনি। এজন্য তারা দায়ী। যখন ফ্যাক্টরি করেন, ব্যবসা করেন, বাড়ি বানান, যখন গাড়ি কেনেন, বিদেশে যান, তখন এগুলো মনে ছিল না?
সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, আগামীকাল এবং পরবর্তী সময়ে ২৮ এপ্রিল এসব ফ্যাক্টরি ও ব্যাংকের সঙ্গে বসে দেখতে হবে, তাদের কী দায়-দেনা আছে। দায় থেকে যদি সম্পদ বেশি থাকে, সেখান থেকে তারা টাকা দিতে পারে কি না, যদি না দিতে পারে সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হবে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে।
Advertisement
তিনি বলেন, তারা (পোশাক কারখানা) প্রতিজ্ঞা করেছেন। কেউ বলেছেন ৭ মের মধ্যে দেবেন (পাওনা পরিশোধ), কেউ বলেছেন ৮ মে'র মধ্যে দেবেন। এই টাকাটা তাদের পরিশোধ করতে হবে। কোথা থেকে পরিশোধ করবেন- যদি সম্পদ বিক্রি করে করা যায়, করা যাবে কি না আমার সন্দেহ আছে। কিংবা বাড়িঘর বিক্রি করে। মালিক দেশে নেই, যার সঙ্গে যোগাযোগ আছে তার মাধ্যমে পাওয়ার অব এটর্নি নিয়ে আসার জন্য বলা হবে, এগুলো বিক্রি করার জন্য।
'বসে দেখতে হবে ব্যাংক যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছে এবং উনারা (পোশাক কারখানা) যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছে, সেটা ঠিক আছে কি না।'
কয়েকটি ব্যাংক অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা তারা কীভাবে করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ের তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। পরবর্তী সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি আসবেন, তার কাছে আমরা জানতে চাইবো আদৌ তদন্ত হয়েছে কি না। হলে কী হয়েছে, কত দূর গিয়েছে।'
শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আমরা কিছু কিছু নাম পেয়েছি। ওই সব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য, সেগুলো নিয়ে বসবেন আলোচনা হবে। ডেডলাইন দেওয়া হবে, ওই সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। যারা ডিফল্টার তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন সাজেস্ট করা হবে।'
আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস