প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, গবেষণার জন্য শুধু গবেষণা নয়, গবেষণা হবে জনকল্যাণ ও উদ্ভাবনমূলক। নিত্যনতুন জ্ঞানের সৃষ্টি, ওষুধ আবিষ্কার, ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অবদান রাখতে হবে।
Advertisement
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ২৮তম দিবস উপলক্ষে ‘ইনোভেট-এডুকেট-এলিভেট ড্রিমস টু দ্য রিয়েলিটি ও বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়: প্রত্যাশা বনাম অগ্রগতি’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠনে সভাপতিত্ব করেন বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপকা ডা. মো. শাহিনুল আলম।
দিবসের বিষয়ে মূল থিম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা বক্তব্য রাখেন।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের থিমটি অত্যন্ত সময় উপযোগী হয়েছে। ইনোভেট শব্দটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। উচ্চতর চিকিৎসাশিক্ষাসহ স্বাস্থ্যখাতে সঠিক নীতিনির্ধারণে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে বিএমইউকে মূল ভূমিকা রাখতে হবে, যা কেবল গবেষণার মাধ্যমেই সম্ভব। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাস্থ্যখাতে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ জনবল তৈরিতে নেতৃত্ব দিতে হবে।
Advertisement
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসাসেবার উন্নয়ন ও মানবৃদ্ধির বিষয়ে তার বিজ্ঞ মতামত তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে ডিজিটালাইজেশন, ই লগ বুক চালু, টেলিমেডিসিন চালু, বিশেষজ্ঞ নার্স তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপকা ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, বিপ্লবোত্তর চেতনা ধারণ করে বাংলাদেশের মানুষ ও রোগীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর চিকিৎসাশিক্ষা, মানসম্মত চিকিৎসাসেবা ও উদ্ভাবনমূলক গবেষণায় অন্যন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করা হবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী টেকনোলজি ও নার্সিংসেবার উন্নয়নেও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ নলেজ জেনারেট করা। সেই লক্ষ্য পূরণে গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে গবেষণা হবে সহজ ও মানুষের কল্যাণধর্মী। গবেষণা হলো সত্যের সাক্ষ্য। গবেষণার মাধ্যমেই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
এদিকে বুধবার (৩০ এপ্রিল) এ দিবসকে ঘিরে কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা, বেলুন ও পায়রা ওড়ানো, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, গবেষণা মঞ্জুরি প্রদান, দুটি নতুন স্টাফ বাস উদ্বোধন, আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী বা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, সাধারণ রোগী ও কেবিন ব্লকে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দেশ, জাতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি কামনায় দোয়া মোনাজাত।
২৮তম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিশেষত্ব হলো- এ বছর এ দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীরা তাদের জন্য আপ্যায়ন বাবদ বরাদ্দ অর্থ সাধারণ রোগী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য উৎসর্গ করেছেন। এই অর্থ দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগী যারা বিএমইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং সাধারণ রোগীদের জন্য ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
Advertisement
গুরুত্বপূর্ণ এই দিবস উপলক্ষে সকালে বি ব্লকের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়ানোর পর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। শোভাযাত্রাটি বি ব্লক থেকে বের হয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হয়ে সি ব্লকের সামনে এসে শেষ হয়।
এরপর শহীদ ডা. মিল্টন হলে গবেষণা মঞ্জুরি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ডা. একেএম কবির আহমেদ রিয়াজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বক্তব্য রাখেন। ৫৬ জন শিক্ষক চিকিৎসকের মাঝে গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়।
এসইউজে/বিএ