কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেললাইন থেকে উদ্ধার হওয়া নিহত তিন যুবকের মধ্যে একজনের পরিচয় মিলেছে। তবে বাকি দুজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
Advertisement
পরিচয় পাওয়া ওই যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে কুমিল্লা রেলস্টেশনেই থাকতো। পেশায় কিছুদিন রংমিস্ত্রির কাজ করলেও পরবর্তী সময়ে মাদকাসক্ত হয়ে টোকাই গ্রুপে যোগ দেন।
কুমিল্লা রেলস্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মোল্লা জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দিনগত রাত সাড়ে ৩টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে বুড়িচংয়ের বাকশীমূল ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় তিন যুবকের মৃত্যু হয়। বিভিন্নভাবে সাইফুলের নাম জানতে পারলেও বাকি দুজনের নাম-ঠিকানা এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সাইফুলের সঙ্গে যে দুজনের মরদেহ রয়েছে তারাও টোকাই গ্রুপের সদস্য।
Advertisement
কুমিল্লা রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সাইফুলের বাবা-মা দুজনই ছেলের দাফনের জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছেন।
আরও পড়ুন কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যুএসময় সাইফুলের মা আসমা বেগম বলেন, ‘ছেলেটাকে যে দাফন করবো সেই খরচের টাকাও নেই। তার বাবাও বাউন্ডুলে। কোনোরকম কাজকর্ম করে আমি সংসার চালাই। ছেলেটা কথা না শুনে রংমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে শুনি রেললাইনে তার লাশ পড়ে আছে।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বুড়িচংয়ের মাধবপুর এলাকায় ১৬২ নম্বর পিলারের কাছ থেকে সাইফুল ইসলামসহ তিন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, রেলের স্লিপার ও লাইনের ওপর ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। বেশ কয়েক টুকরা টি-শার্ট ও দুই জোড়া জুতা পড়ে আছে সেখানে।
Advertisement
সোহেল নামের এক যুবক জানান, লোক মারফত খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তিনি দুই যুবককে জীবিত দেখতে পান। তাদের পা ও হাত কাটা ছিল। তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন তিনি। এসময় আহত দুই যুবক বাঁচানোর জন্য আকুতি করছিলেন ও পানি চাচ্ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই একে একে তারা মারা যান।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলের ঠিক ৫০ গজ দূরে রেললাইনের পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘর রয়েছে। এই ঘরটিতে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতো বখাটেরা। নিহত যুবকদের এই এলাকায় কখনো দেখা যায়নি বলেও জানান সোহেল।
রসুলপুর (সদর) স্টেশন মাস্টার প্রশেনজিৎ চক্রবর্তী জানান, রাত সাড়ে ৩টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তারা কীভাবে একসঙ্গে একই স্থানে মারা যান, সে বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/জিকেএস