বই শুধু জ্ঞানের ভান্ডার নয় বরং সময় ও সমাজের প্রতিচ্ছবি। ইতিহাসের নানা বাঁকে এমন কিছু বই লেখা হয়েছে; যেগুলো মানুষের চিন্তাধারা, সমাজব্যবস্থা ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। আজ এমন পাঁচটি বইয়ের কথাই বলবো, যা আপনাদের একবার হলেও পড়া উচিত।
Advertisement
বইটির লেখক মার্কিন সাহিত্যিক হার্পার লি। এটি ১৯৬০ সালে প্রকাশ হয়। বইটি প্রকাশ হওয়ার পরেই পুলিৎজার পুরস্কার অর্জন করে। শুধু তাই নয়, বইটি মার্কিন সাহিত্যে একটি ধ্রুপদী বই হিসেবে স্বীকৃত। আরেকটি তথ্য হলো, এটি লেখকের একমাত্র ছাপা বই। বইটি আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে বর্ণবৈষম্য, অবিচার ও নৈতিকতা নিয়ে লেখা উপন্যাস। ছোট্ট মেয়ে স্কাউটের চোখ দিয়ে দেখা সমাজের রূঢ় বাস্তবতা আমাদের শিক্ষা দেয়—ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো সব সময় সহজ নয়, তবে সবচেয়ে জরুরি।
ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার্স অব সলিচিউডবইটির লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। বইটি ১৯৬৭ সালে প্রকাশ হয়। লাতিন আমেরিকার এক কাল্পনিক শহর ‘মাকোন্দো’ আর বুয়েন্দিয়া পরিবারের সাত প্রজন্মের গল্প। যেন এক অলৌকিক গাঁথা। জাদুবাস্তবতা আর রাজনৈতিক ইতিহাস একসঙ্গে মিশে গেছে এমনভাবে, যা বিশ্ব সাহিত্যে বিরল। রাজনীতি, সমাজ ও ইতিহাসের জটিলতা কীভাবে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে—এটি জানতে চাইলে এই বই আপনার সহচর হতেই পারে।
আরও পড়ুন
Advertisement
বইটির লেখজ জর্জ অরওয়েল। বইটি ১৯৪৯ সালে লেখা। একটি কল্পিত রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের চিন্তা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। ‘বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং ইউ’—এ বাক্যই যেন পরিণত হয়েছে এক আতঙ্কের প্রতীকে। এ বিষয়বস্তু নিয়েই লেখা বিখ্যাত বইটি। আজকের নজরদারি প্রযুক্তি ও মতপ্রকাশের সংকুচিত পরিবেশে বইটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। এটি শুধু উপন্যাস নয়, এক ভবিষ্যদ্বাণী।
দ্য ডায়েরি অব আ ইয়াং গার্লবইটি লিখেছেন অ্যানা ফ্র্যাঙ্ক। বইটির প্রকাশকাল ১৯৪৭ সাল। এক কিশোরী মেয়ের ডায়েরি, যে নাৎসি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার আগপর্যন্ত গোপনে লুকিয়ে ছিল। সেই ডায়েরির পাতায় উঠে এসেছে ভয়, সাহস, আশা আর এক অসাধারণ মন। বইটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দলিলই নয় শুধু—এক মানবিক কণ্ঠস্বর। যা কিশোর মনেও ইতিহাসের গভীরতা তুলে ধরে।
প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিসজেন অস্টেন রচিত বইটি একটি উপন্যাস। বইটি ১৮১৩ সালে প্রকাশ পায়। নারী স্বাধীনতা, শ্রেণিচেতনা ও আত্মসম্মান নিয়ে রচিত ক্লাসিক এ উপন্যাস এখনো পাঠকের কাছে প্রিয়। এলিজাবেথ বেনেটের আত্মবিশ্বাসী চরিত্র হয়ে উঠেছে নারীবাদের প্রাথমিক রূপের প্রতীক। সমাজ বদলালেও সম্পর্ক, শ্রদ্ধা ও ব্যক্তিত্বের মূল্য আজও অপরিবর্তিত। বইটি পড়লে তা আরও ভালোভাবে বোধগম্য হয়।
এসইউ/এমএস
Advertisement