দেশের শেয়ারবাজারে দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও (২২ এপ্রিল) ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। অবশ্য এই দরপতনের মধ্যে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড।
Advertisement
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলো।
মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শুরুর মতো শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে।
কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ড বাদে অন্য খাতের কোম্পানিগুলো লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভালো-মন্দ সব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমার প্রবণতা বাড়ে। ফলে অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার মধ্যেও সার্বিক বাজারে দাম কমার তালিকা বড় হয়। একই সঙ্গে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
Advertisement
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১১৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৪টির। আর ৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮১টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১১৫টির দাম কমেছে। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৬টির দাম কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৩টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ২৮টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২টির এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সার্বিকভাবে দাম কামার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১২১ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়েগঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
Advertisement
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১০ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহাজিবাজার পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মিডল্যান্ড ব্যাংক, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইস্টার্ন ব্যাংক, ফাইন ফুডস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৪টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর/এমএস