নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ব্যবসায়ীর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে জুবায়ের আহমেদ শাকিব (২৮) নামে এক ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে চাঁদা না দিলে ওই ব্যবসায়ীর দোকান ভেঙে ফেলার হুমকি দেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
এ ঘটনায় শাকিবসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন মো. সোহেল রানা নামে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। তিনি ওই উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে।
অভিযুক্ত শাকিব উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও একই কাশিপুর গ্রামের মো. দিলোয়ার হোসেনের ছেলে।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, একই উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মো. আরিফ (৩০), মো. বাবলু মিয়া (৩৫), মো. দিলোয়ার হোসেন (৫৮), মো. নান্টু মিয়া (২৪) ও বায়জিদ (১৮)।
Advertisement
শুক্রবার (২ এপ্রিল) মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ করেন সোহেল রানা।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার কাশিপুর বাজারে একটি মনোহারী দোকান ও একটি রাইস মিল রয়েছে সোহেল রানার। ৫ আগস্টের পর থেকে স্থানীয় ছাত্রদল নেতার শাকিব তার লোকজন নিয়ে গিয়ে সোহেল রানার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। সবশেষ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শাকিব লোকজন নিয়ে সোহেল রানার দোকানে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। তবে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহেল রানার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হুমকি দিয়ে তারা বলেন, ‘আগামী দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে তোর দোকান ভেঙে ফেলবো।’ এছাড়া সময় সুযোগ মতো পাইলে খুন করে মরদেহ গুম করার হুমকি দিয়ে তারা চলে যান।
অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, শাকিব গত ৫ আগস্টের পর থেকে নানা ধরনের হুমকি ধামকিসহ আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড করে চলছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় শাকিব তার লোক নিয়ে আমার দোকানে এসে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দেওয়ায় হুমকি দিয়ে বলে যায়, আগামী দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে মেরে ফেলবে। এসময় দোকানে এলাকার অনেক লোক বসা ছিলেন। তাদের সামনেই এমন কাজ করেছে। এখন ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। শেষে বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল আমার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে। তবে এলাকার লোকজনের মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। ভুক্তভোগীরাও ঘটনাটি জানিয়েছেন। ঘটনার সত্য মিথ্যা জানি না। যেহেতু থানায় অভিযোগ দিয়েছে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে আশা করছি। সত্য হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর মিথ্যা হলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এতে এলাকায় এমন ঘটনা আর ঘটবে না।
Advertisement
অভিযুক্ত জুবায়ের আহমেদ শাকিব তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এসবের কিছুই জানি না। আমি ওইদিন ঢাকায় ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা।
মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, অভিযোগ তদন্ত করার জন্য থানার একজন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচ এম কামাল/এমএন/এএসএম