ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের সমস্যা সমাধানের চ্যালেঞ্জের মধ্যেই দেশ-বিদেশের আরও কিছু নেতিবাচক সিদ্ধান্ত এসেছে এ দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য, যা দেশের সার্বিক ব্যবসায় পরিস্থিতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
Advertisement
রোববার (২০ এপ্রিল) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকস (দায়রা) আয়োজিত ‘বাণিজ্যের উদীয়মান দৃশ্যপট: ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং বাংলাদেশের ওপর তার প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল। তিনি সেমিনারের শুরুতেই বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশের অনিশ্চয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা একটি অনিশ্চিত অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আছি। বিশ্ব বাণিজ্য একসময় নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে চলতো, কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। এ দেশেও এমন অনেক সিদ্ধান্ত আসছে, যা ব্যবসাবন্ধব নয়।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ট্রাম্পের ট্যারিফের মধ্যে যখন আমরা অনিশ্চিত, তখন ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো। এতে পোশাক খাতের সমস্যা হবে। এখন সুতা সমুদ্র পথে আনতে হবে। এ দেশে প্রচুর ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা আছে, যারা এখন ছোট পরিসরে আর সুতা আমদানি করতে পারবে না। বিশেষ করে, শুল্ক আরোপের এই সময় এমন সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি।
Advertisement
এছাড়া ভারতে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ, এতে আমাদের ২ হাজার কোটি খরচ বেড়েছে। আবার সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালো নতুন কারখানায়। তাহলে বিনিয়োগ আসবে কীভাবে? সরকার ইনভেস্টমেন্ট সামিট করলো, বিদেশি যারা এখন বিনিয়োগে আসবে তারা কি এই অসামঞ্জস্য খরচের মধ্যে বিনিয়োগ করবে।
আবার আমরা এলডিসি গ্রাজুয়েশন পেছাচ্ছি না। তখন তো ব্যবসা করা আরো কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের এ গ্রাজুয়েশন এর জন্য অর্থনৈতিক সক্ষমতা কতটুকু আছে? সেটা দেখা হচ্ছে না। আমাদের পণ্যবহুমুখীকরণে অনেক দুর্বলতা রয়ে গেছে, আসলে কিছুই হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দীন ইসলাম তার বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে পোশাকের ওপর নির্ভরশীলতার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন মাত্র ৬-৭ প্রকার পোশাক আমারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করি। যদি একটি পণ্যের উপরেও শুল্কের হারের পরিবর্তন হয় তাহলে মারাত্মক একটি প্রভাব পড়ে।
তিনি আরো বলেন, বাণিজ্য চুক্তি সম্প্রসারণ, নতুন বাজার খোঁজা এবং রপ্তানিকারকদের সহায়তায় নতুন প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে ট্রাম্পের এ শুল্ক অসুবিধা মোকাবিলা করতে হবে। একইভাবে তিনি স্মার্ট কূটনীতি, কাঠামোগত সংস্কার এবং বেসরকারি খাতের উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন।
Advertisement
এনএইচ/এসএনআর/জেআইএম