ভাঙ্গাচোরা দল নিয়ে সুপার লিগের শুরুতেই হোচট খেল মোহামেডান। বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় সুপার লিগের প্রথম দিন মোহামেডানকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারালো লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ।
Advertisement
মোহামেডান ইনিংসে বৃষ্টি এসে বাগড়া দিলেও তার আগেই চরম বাজে ব্যাটিং করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় সাদা-কালো শিবির। ইনিংসের ৩০ নম্বর ওভারে (২৯.৪ বলে) বৃষ্টি নামে। মোহামেডানের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ১১৭।
বৃষ্টির কারণে দীর্ঘসময় খেলা বন্ধ ছিল। বৃষ্টি থামার পর আর মোহামেডানের বাকি ইনিংস খেলার সময় ছিল না। কাজেই খেলা গড়ায় ডিএল মেথডে। তখন লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জের টার্গেট দাড়ায় ২২ ওভারে ৯৩।
ওপেনার তানজিদ তামিম প্রথম ওভারে শূন্য রানে আউট হলেও অপর ওপেনার সাইফ হাসান আর ওয়ান ডাউনে নামা সৌম্য সরকার আস্থা ও দৃঢ়তার সাথে ব্যাট চালিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
Advertisement
এ দু’জন অবিচ্ছিন্নভাবে ৯৪ রানের জুটি গড়লে ডিএল মেথডে বেঁধে দেয়া টার্গেট ছুয়ে ৫২ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সাইফ হাসান ৪৪ বলে ৩ ছক্কা ও ৫ বাউন্ডারিতে ৫৫ আর সৌম্য ৩৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৬ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফেরেন।
এর আগে নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল, তার পরিবর্তে দল পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া তাওহিদ হৃদয়, পেসার তাসকিন, মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অংকন, মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের মত অপরিহার্য্য সদস্য ছাড়া খেলতে নেমে মোহামেডান চরম বিপাকে পড়ে।
অতগুলো নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার ছাড়া দল সাজাতে বাইরে থেকে মোস্তাফিজ, ওপেনার তৌফিক তুষার এবং মিডল অর্ডার ফরহাদ হোসেনকে দলে নিয়ে একাদশ সাজায় মোহামেডান; কিন্তু কোন লাভ হয়নি। একজনও দলকে কিছু দিতে পারেনি।
রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে আবাহনীর সাথে সেঞ্চুরি করে হঠাৎই মোহামেডান সমর্থকদের আশার প্রতীক বনে যান তরুণ আনিসুল ইসলাম ইমন। আজকে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও সাদা-কালোদের ব্যর্থতার মিছিলে সর্বাধিক ৩৫ রান আসে ইমনের ব্যাট থেকেই। আজ সকালে উইকেটের চারদিকে ৭ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তরুণ ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন ৩৫ রান করেন ৩৪ বলে।
Advertisement
আনিসুল ইমন ছাড়া মোহামেডান তাকিয়ে ছিল রনি তালুকদার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দিকেও; কিন্তু তারা কেউই কিছু করতে পারেননি। রনি তালুকদার (০), এ ম্যাচে অন্তর্ভুক্ত ওপেনার তৌফিক তুষার (১৮), অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১২), ফরহাদ হোসেন (১৫), আরাফাত জুনিয়র (২) আর নাসুম আহমেদ (০) রান করতে না পারায় মোহামেডানের লড়াকু স্কোর গড়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।
মোহামেডান যখন চরম বিপাকে ঠিক তখন (সকাল সাড়ে ১১টায়) বৃষ্টি নেমে আসে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের সময় মোহামেডানের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১১৭। আরিফুল ইসলাম ১৬ আর আবু হায়দার রনি ৭ রানে ব্যাট করছিলেন।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ইসলাম (৩৭ রানে ৩ উইকেট) আর পেসার রিজওয়ান চৌধুরী (৯ রানে ২ উইকেট) মোহামেডান ইনিংসে মড়ক লাগান। তানভির বোলিংয়ে এসে এক ওভারে এ ম্যাচের ওপেনার তৌফিক তুষার ও নিয়মিত ওপেনার অথচ এ ম্যাচে ওয়ানডাউন খেলা রনি তালুকদারকে আউট করে মোহামেডানকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন।
সে ধাক্কা আর সামলাতে পারেনি সাদা-কালোরা। তারপর আনিসুল ইসলাম ইমন একদিকে রান চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেও পেসার রিজওয়ানও ২ ওভারের ব্যবধানে আনিসুল ইমন আর জুনিয়র আরাফাত সানিকে ফিরিয়ে দিলে মোহামেডান চরম বিপদে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় তারা।
এআরবি/আইএইচএস