পাবনার পদ্মা নদীর নাজিরগঞ্জ এলাকায় ঝড়ের কবলে ফেরি ক্যামেলিয়া নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভাসমান মাছের খামারে উঠে পড়েছে। এতে যাত্রী-যানবাহনের তেমন কিছু না হলেও ভাসমান ওই খামারের সব খাঁচা ভেঙে অন্তত ৩৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজবাড়ি ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট ঘাট থেকে নাজিরগঞ্জে যাওয়ার সময় ফেরি ক্যামেলিয়া ঝড়ের কবলে পড়ে। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরিটি ভাসমান মৎস্য খামারের উঠে যায়। এতে বেশ কয়েকটি নৌকাসহ ৪০টি ভাসমান খাঁচা নদীতে তলিয়ে যায়। এসময় খাঁচায় থাকা প্রায় ২৬ লাখ টাকার মাছ নদীতে ভেসে যায়। এ ঘটনায় জাল, ড্রাম ও নৌকাসহ প্রায় ৩৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, চালক ঝড়ের মধ্যে নোঙ্গর না করে ফেরিটি ঘাটে নেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জেলেদের নৌকার উপর উঠে যায় এবং পরে পাশে থাকা ভাসমান খামারে উঠে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়।
Advertisement
এ ব্যাপারে মাছচাষি জহিরুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এ খামার শুরু করি। খাঁচাগুলোতে শুধু ২৬ লাখ টাকার মাছ ছিলো, এছাড়া ড্রাম ও জালসহ সবকিছু মিলিয়ে এখানে দুজনের বিনিয়োগ ৩৮ লাখ টাকা। আজকের এই দুর্ঘটনায় সবশেষ।
তিনি আরও বলেন, যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করি। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে চার লাখ, ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে দুই লাখসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ২২ লাখ টাকা শুধু ঋণই নিয়েছি। ঘটনার পর ৮-১০টি খাঁচা তুলেছি। এরমধ্যে মাত্র দুটি খাঁচায় কিছু মাছ আছে। বাকিগুলো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। বন্দরের কর্মকর্তারা এসেছিলেন, তারা বললেন আবেদন দিতে৷ এরপর তারা নাকি কি করবেন।
এদিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরীটি ভাসমান মাছের খামার ও জেলেদের নৌকার উপরে উঠে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটানোয় স্থানীয়রা ফেরীটি আটকে রাখেন। পরে নৌপুলিশ ও নৌবন্দরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্বস্ত করলে ফেরিটি ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এএইচ/জেআইএম