ছয় দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে সারাদেশে রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি দিয়েছিলেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। তবে বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও গোয়েন্দা সংস্থার অনুরোধে তারা কর্মসূচি শিথিলের ঘোষণা দেন।
Advertisement
তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ ও শিক্ষা উপদেষ্টার আহ্বানে তারা কর্মসূচি সাময়িকভাবে শিথিল করছেন। সচিবালয়ে তারা উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
দুপুর ১২টার দিকে তারা সচিবালয়ে যান। কিন্তু সেখানে উপদেষ্টা ও সচিবরা কেউই ছিলেন না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বল্প সময়ের বৈঠকে বসেন একজন অতিরিক্ত সচিব। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় সেখান থেকে বেরিয়ে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের নেতা জুবায়ের পাটোয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ, কথাবার্তা কিছুই হয়নি। সচিবরাও ছিলেন না। স্পষ্টই আমাদের সঙ্গে সরকারের তরফ থেকে প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা প্রতারিত হয়েছি।’
Advertisement
কোন মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ বা আহ্বান পেয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে জুবায়ের বলেন, ‘সচিবের দপ্তর থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, এনএসআই, ডিবি ও ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করছেন এবং শিক্ষা উপদেষ্টা আহ্বান জানিয়েছেন।
‘তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা) অনুরোধ জানিয়েছিলেন, আমরা যেন বৃহস্পতিবারের রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল করি। তারা শিক্ষা উপদেষ্টা, মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ দাবি-দাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের বসার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আমরা এসে কাউকে পাইনি। এমনকি কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিবও ছিলেন না।’
আরও পড়ুন আন্দোলন কঠোর করার ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের সারাদেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদেরজুবায়ের বলেন, ‘শুধু একজন অতিরিক্ত সচিবকে আমরা পেয়েছিলাম। তখন আমরা চলে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের অনুরোধ করেন, বসতে বলেন। আমাদের দাবি-দাওয়া ও কথা শুনতে চান। তিনি বলেছিলেন, তিনি না পারলেও অন্তত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবেন। বিষয়টি সমাধান করবেন। কিন্তু আমরা আলোচনায় সন্তুষ্ট নয়। তার সঙ্গে বসার পরপর বুঝতে পারি যে কোনো ফলাফল আসবে না। তখন আমরা বেরিয়ে এসেছি।’
পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বসবো। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে মিডিয়াকে জানাবো। কারিগরি শিক্ষার্থীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করাটা মেনে নেওয়া হবে না।’
Advertisement
ছয় দফা দাবিতে প্রায় দেড় মাস ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি করছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
দিনভর বিক্ষোভ-অবস্থানের পর সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা সারাদেশে রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি করবেন। তবে রাতে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানোয় তারা কর্মসূচি সাময়িক শিথিল করেন। এরপর সচিবালয়ে বৈঠকে যান।
এএএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস