নোয়াখালীর কবিরহাটে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে প্রবেশ করা ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম আকাশকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। শোকজ পাওয়া সাইফুল ইসলাম কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি।
Advertisement
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির শোকজের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাকে শোকজের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এরআগে, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ফেসবুকে দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতির পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম সই করা এ-সংক্রান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রকাশ করা হয়।
Advertisement
সাইফুল ইসলাম আকাশকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।’
আরও পড়ুন এসএসসির পরীক্ষার হলে ছাত্রদল নেতা, ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরাএরআগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ‘এসএসসির পরীক্ষার হলে ছাত্রদল নেতা, ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা’ শীর্যক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগো নিউজ।
এতে বলা হয়, নোয়াখালীর কবিরহাটে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে প্রবেশ করে অসৎ সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
পরীক্ষা কক্ষে ছাত্রদল নেতার বিচরণের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) পরীক্ষার প্রথম দিন কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে ছাত্রদল নেতা পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে অসৎ সহযোগিতা করবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি আমরা স্যারদের বলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
রফিক উল্যাহ নামের একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ থাকার বিধান নেই। সেখানে পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রদলের নেতা কীভাবে কক্ষে প্রবেশ করলো, তা জানতে কেন্দ্র সচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।’
তবে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম আকাশ পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের বাইরে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে হেল্প ডেস্ক বসিয়েছিলাম। পরীক্ষার কক্ষে পানি লাগবে বলায় সেখানে পানি দিতে গিয়েছিলাম। তবে আমাদের বিরোধী পক্ষের কেউ ছবি তুলে সেটি ভিন্নভাবে প্রচার করছেন। তবে এভাবে কক্ষে প্রবেশ করা উচিত হয়নি। আমরা আর এভাবে যাবো না। ভবিষ্যতে বিষয়টি আমাদের মনে থাকবে।’
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জিকেএস