রাজনীতি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, ‘সতর্ক প্রতিক্রিয়া’ বিএনপিতে

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, ‘সতর্ক প্রতিক্রিয়া’ বিএনপিতে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের তাৎক্ষণিক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তকে ‘সতর্ক ও পর্যালোচনাযোগ্য’ একটি বিষয় হিসেবে দেখছেন।

Advertisement

শনিবার (১০ মে) রাতে যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে জাগো নিউজের যোগাযোগ হয়। তাদের কেউ কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি, কেউ বলছেন- পুরো বিষয়টি এখনো মূল্যায়নের পর্যায়ে রয়েছে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক মো. আমিনুল হক জাগো নিউজকে বলেন, গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আমাদের নেতাকর্মীরা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। সেজন্যই তাদের নিষিদ্ধের প্রসঙ্গটি এসেছে। তবে এ বিষয়ে এরই মধ্যে আমাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। জনগণ যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তা মেনে নেবো।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, প্রেস নোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলেও দলের নিবন্ধন বাতিল হয়নি। এতে সরকারপন্থি একটি অংশের দাবি পূরণ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। হাসনাত আব্দুল্লাহ যখন এক ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেন, তখনই বুঝেছিলাম, সরকার কিছু একটা করতে যাচ্ছে। তবে পুরো বিষয়টা বিশ্লেষণ করে তবেই চূড়ান্ত মন্তব্য করা উচিত।

Advertisement

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, প্রথম থেকেই বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হচ্ছিল যে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাই না। এখন সরকার নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানাচ্ছি না, প্রতিবাদও করছি না। দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার বলেন, নিষিদ্ধ করা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে, কিন্তু ফল কী হয়েছে? মূলত যারা অপরাধে জড়িত, তাদের বিচার হওয়া উচিত।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে দলের হাইকমান্ড রাতে বৈঠকে বসেছেন। যেখানে রাজনৈতিক ও আইনগত দিকগুলো পর্যালোচনা করে দলের আনুষ্ঠানিক অবস্থান ঘোষণা করা হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

Advertisement

শনিবার (১০ মে) রাতে যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

কেএইচ/এমকেআর