অর্থনীতি

ঈদের পর বাজার মূলধন হারালো ২ হাজার কোটি টাকা

ঈদের পর বাজার মূলধন হারালো ২ হাজার কোটি টাকা

ঈদের আগে শেষ তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিললেও ঈদের পর আবার দরপতনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। ঈদের পর গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই দাম কমার তালিকায় ছিল বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এতে গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে। তবে বেড়েছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ।

Advertisement

গত ৩১ মার্চ পালিত হয়েছে মুসলমান ধর্মালম্বীদের বৃহৎ উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ। এই ঈদ উপলক্ষে ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১, ২ ও ৩ এপ্রিল ছিল সরকারি ছুটি।

ঈদুল ফিতরের সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগে ২৮ মার্চ (শুক্রবার) ও ২৯ মার্চ (শনিবার) ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এছাড়া ঈদের ছুটি শেষে ৪ এপ্রিল শুক্রবার ও ৫ এপ্রিল শনিবার হওয়ায় আরও দুদিন ছুটি মেলে। সব মিলিয়ে ঈদ উপলক্ষে ৯ দিন বন্ধ ছিল সরকারি অফিস। একই সঙ্গে শেয়ারবাজারও টানা নয়দিন বন্ধ ছিল।

নয়দিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার (৬ এপ্রিল) থেকে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়। ঈদের পর প্রথম সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪১টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৫টির। এছাড়া ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।

Advertisement

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ২২৩ কোটি টাকা বা শুন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন

বাতিল হলো পুঁজিবাজারের ‘নিষ্ক্রিয়’ উপদেষ্টা কমিটি জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে: গভর্নর

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকও কমেছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ১৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ।

প্রধান মূল্যসূচক কমলেও গত সপ্তাহে ডিএসই শরিয়াহ ও ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে। ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৩ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। ঈদের ছুটির আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১০ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ।

Advertisement

এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ। ঈদের ছুটির আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৬ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৪২ শতাংশ।

গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকলেও ডিএসইতে লেনদেনের গতি বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ঈদের ছুটির আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪০৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বা ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- শাইনপুকুর সিরামিক, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, এসিআই লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ইনফিউশন, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।

এমএএস/কেএসআর/এমএস