খেলাধুলা

টেস্ট দলে ১৫ জন, সুপার লিগে কোন ক্লাব বেশি ভুগবে?

টেস্ট দলে ১৫ জন, সুপার লিগে কোন ক্লাব বেশি ভুগবে?

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দল ঘোষণা হয়েছে। ১৫ জনের বহরে নেই পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রধান স্ট্রাইকবোলার তাসকিন ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েছেন। যেহেতু তাকে টেস্ট দলে রাখা হয়নি, তাই ধরে নেয়া যায় তাসকিন মোহামেডানের হয়ে সুপার লিগও খেলতে পারবেন না।

Advertisement

হার্ট অ্যাটাকে মাঠ থেকে ছিটকে পড়া নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল এমনিতেই নেই। না থাকার দলে যুক্ত হয়েছেন তাসকিনও। আরও ৪ জন (মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম) টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন। তার মানে প্রথম একাদশের ৬ জনকে ছাড়া সুপার লিগে মাঠে নামতে হবে সাদাকালোদের।

এছাড়া চ্যাম্পিয়ন আবাহনী (নাজমুল হোসেন শান্ত , মুমিনুল হক, নাহিদ রানা), লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ (মাহমুদুল হাসান জয়, জাকের আলী অনিক, তানজিম হাসান সাকিব) ও প্রাইম ব্যাংকের (জাকির হাসান, হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদ) তিনজন করে ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে। যেহেতু ২০ এপ্রিল থেকে সিলেটে প্রথম টেস্ট। আর তার আগে ১৫ এপ্রিল নাগাদ শুরু হয়ে যাবে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগ; তাই ধরেই নেয়া যায় ওপরে যে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হলো তাদের দল সুপার লিগ খেললে তাদের কারো পক্ষেই নিজ নিজ দলের হয়ে খেলা সম্ভব হবে না। ওই ১৫ জনের সবাই নিজ নিজ দলের অপরিহার্য সদস্য। তাদের অভাববোধ হবে। এবং রিজার্ভ বেঞ্চে তাদের জায়গা পূরণ করার মত পারফরমারও নেই। তার মানে মোহামেডান, আবাহনী, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, প্রাইম ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংক পূর্ণ শক্তি নিয়ে সুপার লিগ খেলতে পারবে না।

এর মধ্যে মোহামেডান একটু বেশিই দুর্বল হয়ে পড়বে। এমনিতেই নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল নেই। প্রথম ৬ খেলায় তামিম দুটিতে সেঞ্চুরি করে দল জিতিয়েছেন। তামিমের জায়গা নেওয়ার মতো কেউ নেই দলে।

Advertisement

এছাড়া মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও ৩১৯ রান করে রান তোলায় ১৫ নম্বরে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে দুই স্পিনার তাইজুল আর মিরাজ না থাকা মানে মোহামেডান বোলিংয়ের প্রায় অর্ধেক শক্তি কমে যাওয়া।

বাঁহাতি তাইজুল শেষ খেলায় প্রাইম ব্যাংকের সাথে মাত্র ৫ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। ৯ ম্যাচে ২০ উইকেট দখল করে উইকেটশিকারে সবার ওপরে তিনি। অফস্পিনার মিরাজ যদিও সেরা ছন্দে নেই, তারপরও ৭ খেলায় ১২ উইকেট শিকার করে উইকেট প্রাপ্তিতে সেরা ১৪‘তে আছেন।

মোদ্দা কথা, মোহামেডানের যে ৪ জন টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন, তাদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম ছাড়া বাকি ৩ জন (মাহিদুল ইসলাম, মেহেদী মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম) এবারের লিগে বেশ ভালো পারফরম করেছেন। এক ঝাঁক কোয়ালিটি ও অ্যাফিক্টেভ পারফরমার ছাড়া মোহামেডান অনেক দুর্বল দল হয়ে যাবে। সেই কমে যাওয়া শক্তির মোহামেডান সুপার লিগে গিয়ে কতটা কী করতে পারবে, সে প্রশ্ন অনেকেরই। এছাড়া আবাহনী, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও প্রাইম ব্যাংকেরও সমান ৩ জন করে অপরিহার্য সদস্য থাকবেন না সুপার লিগে। এর মধ্যে আবাহনী খুব বেশি করে মিস করবে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হককে। দুজনই রানে ফিরেছেন এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলের সাফল্যে কার্যকর অবদানও রেখেছেন। এছাড়া পেসার নাহিদ রানাও আবাহনী পেস বোলিংয়ের অন্যতম শক্তি। তার অভাববোধ হবে। একইভাবে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ জাকের আলী অনিক। তার জায়গা নেওয়ার মত পারফরমার নেই দলটিতে। মাহমুদুল হাসান জয় আর পেসার তানজিম সাকিবও প্রথম একাদশের নিয়মিত মুখ। তাদের অনুপস্থিতিও টের পাওয়া যাবে।

একই অবস্থা প্রাইম ব্যাংকেও। তাদের ব্যাটার কোটায় টপ অর্ডার জাকির হাসান টেস্ট দলে ঢুকে সুপার লিগ খেলতে পারবেন না। তবে প্রাইম ব্যাংক খুব বেশি করে মিস করবে ২ প্রধান পেসার হাসান মাহমুদ আর খালেদ মাহমুদকে। দুজনই এবারের লিগে দারুণ বোলিং করে প্রাইম ব্যাংককে বেশ ভালো সার্ভিস দিয়েছেন। সে তুলনায় ব্যাটার জাকির হাসান অনেকটাই নিষ্প্রভ।

Advertisement

অন্যদিকে সাদমান ইসলাম ও নাইম হাসানের মধ্যে ওপেনার সাদমানকে খুব মিস করবে অগ্রণী ব্যাংক। অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের সঙ্গে বেশ ভালো পারফরম করেছেন সাদমান। ৩৭৭ রান করে বাঁহাতি এই ওপেনার এখন রান তোলায় নবম। অফস্পিনার নাইম হাসান অবশ্য সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তার বিকল্প পারফরমারও আছে অগ্রণী ব্যাংকে।

সব মিলে সুপার লিগের সম্ভাব্য দলগুলোর কমবেশি শক্তির হেরফের ঘটবে। এখন সেই খর্বশক্তি নিয়ে কোন দল হাসে শেষ হাসি, সেটাই দেখার।

এআরবি/এমএমআর/এএসএম