জাতীয়

মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ বাস্তবায়নে শুল্ক স্থগিতে চিঠি

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুল্ক স্থগিতের কারণ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি যেন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে, এজন্য আরোপিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

Advertisement

সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে দেওয়া চিঠির বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য এজেন্ডাকে পূর্ণ সমর্থন জানাতে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

আরও পড়ুন

Advertisement

৩৭ শতাংশ শুল্ক ৩ মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে ট্রাম্পকে চিঠি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ইস্যুর ইতিবাচক সমাধানের আশা ড. ইউনূসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কত শতাংশ শুল্ক বসালেন ট্রাম্প 

চিঠিতে ড. ইউনূস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ আপনার বাণিজ্য এজেন্ডাকে পূর্ণ সমর্থন জানাতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তার বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত পৃথক একটি চিঠি শিগগির বাণিজ্য উপদেষ্টা মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে পাঠাবেন।

অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগটি যেন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে, এ কারণে আরোপিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা চিঠিতে উল্লেখ করেন, আমরাই প্রথম দেশ যারা এমন একটি আগ্রাসী উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসি সফরকারী তার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের সফরের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেন।

Advertisement

এর পর থেকে উভয় নির্দিষ্ট কার্যক্রম চিহ্নিত করতে দেশ একসঙ্গে কাজ করছে বলেও জানানো হয় চিঠিতে।

প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশই প্রথম দেশ, যারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বহু বছরের চুক্তিতে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের উদ্যোগের মূল লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য যেমন তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিনের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা, যা সেদেশের কৃষকদের উপকারে আসবে।

আরও পড়ুন

শুল্ক আরোপ নিয়ে নানা দেশে টানাপোড়েন, অটল অবস্থানে ট্রাম্প ট্রাম্পের শুল্কারোপ: বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে কী ভাবছে দেশগুলো? 

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত অধিকাংশ পণ্যের ওপর বাংলাদেশই সবচেয়ে কম শুল্ক আরোপ করে বলে চিঠিতে জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার চিঠির বরাত দিয়ে শফিকুল আলম আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য যেমন গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর শুল্ক আরও কমানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তুলার দ্রুত বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত বন্ডেড গুদাম নির্মাণ করা হবে।

‘আমরা কিছু পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাতিল করছি, মোড়কজাতকরণ, লেবেলিং ও প্রত্যয়ন সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন সহজ করছি এবং কাস্টমস প্রক্রিয়া ও মানদণ্ড সহজ করার মতো বাণিজ্য সহায়ক পদক্ষেপ নিচ্ছি’- উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

এমইউ/এমকেআর/জিকেএস