আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের ‘দাওয়াইয়ে’ এশিয়ার শেয়ার বাজারে ধস

ট্রাম্পের ‘দাওয়াইয়ে’ এশিয়ার শেয়ার বাজারে ধস

বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি। এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাদ যায়নি এশিয়ার শেয়ার বাজারও। এই মহাদেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। তবে এই শুল্কনীতিকে ‘দাওয়াই’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

সোমবার (৭ এপ্রিল) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এশিয়ার কয়েকটি দেশের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের নিম্নমুখী চিত্র উঠে এসেছে।

এতে দেখা গেছে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ -এর সূচক কমেছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, হংকংয়ের হ্যাং সেং-এর সূচক কমেছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং হংকংয়ে তালিকাভুক্ত যুক্তরাজ্যের ব্যাংক এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের শেয়ারের দরও কমেছে।

এর আগে মার্কিন ফিউচারের ব্যাপকভাবে দর পতন ইঙ্গিত দিয়েছিল যে দেশটির বাজারগুলো খুললে ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারের পতন হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শুল্কনীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, অনেক সময় কোনো কিছু ঠিক করার জন্য ওষুধ খেতে হয়।

Advertisement

পণ্যের দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়া এবং বাজারে মন্দার আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে আমেরিকান ভোক্তাদের ‘সহনসীমা’ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমি মনে করি আপনি খুব বোকার মতো প্রশ্ন করেছেন। আমি চাই না যে কোনো কিছু খারাপের দিকে যাক কিন্তু কখনও কখনও আপনাকে কিছু ঠিক করার জন্য ওষুধ খেতে হয়।

গত সপ্তাহে ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘোষণার পর সারা বিশ্বের অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে। চীন থেকেও পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধ ও মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে ট্রাম্পের শুল্কনীতি এখানে স্থির থাকবে কি না, নাকি একটি স্থায়ী নতুন শাসনব্যবস্থার অংশ, কিংবা অন্যান্য দেশের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য আলোচনার কৌশল—তা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন বিনিয়োগকারী এবং রাজনৈতিক নেতারা।

রোববার (৬ এপ্রিল) সকালের একটি টকশোতে শুল্কনীতিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিমান পরিবর্তন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্পের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, গত বুধবারের ঘোষণার পর থেকে ৫০টিরও বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

Advertisement

এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বেসেন্ট বলেন, তিনি (ট্রাম্প) নিজের দেশের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা তৈরি করেছেন। আগামী দিনগুলোতেও এই শুল্ক বহাল থাকবে।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক সিবিএস নিউজের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে বলেন, কয়েক দিন ও সপ্তাহ ধরে নতুন এই শুল্ক বহাল থাকবে।

আরও পড়ুন: শুল্ক আরোপ নিয়ে নানা দেশে টানাপোড়েন, অটল অবস্থানে ট্রাম্প চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে ফেঁসে যাচ্ছে অ্যাপল স্যামসাংকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ ফোননির্মাতা এখন অ্যাপল

তবে শুল্কারোপের কারণে বিশ্বজুড়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা কমিয়ে আনতে চেষ্টা করেছেন হোয়াইট হাউজের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট। তিনি বলেন, সুদের হার কমিয়ে আনতে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবেই এই শুল্কারোপ করা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে না।

টিটিএন