দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় ঈদে কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রির রেকর্ড

চুয়াডাঙ্গায় ঈদে কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রির রেকর্ড

এবারের ঈদে চুয়াডাঙ্গার দই-মিষ্টির বাজারে ব্যাপক বিক্রি হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার কোটি টাকার বেশি দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। এতে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

ঈদের উৎসবমুখর পরিবেশে সব শ্রেণির মানুষের খাবারের তালিকায় দই-মিষ্টি আবশ্যিক উপকরণ হয়ে উঠেছে, যা এর চাহিদা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু জেলা শহর নয়, চুয়াডাঙ্গার প্রত্যন্ত অঞ্চল, উপজেলার বাজার এবং গ্রামাঞ্চলের দই-মিষ্টির দোকানগুলোতেও বিক্রি ছিল আশানুরূপ।

ঈদের দুদিন আগে থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরসহ উপজেলা পর্যায়ের দই-মিষ্টির দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে, তারা যথেষ্ট পণ্য সরবরাহ করতেও হিমশিম খেয়েছেন। শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেই দুই দিনে প্রায় দুই কোটি টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

এক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলাজুড়ে কয়েক কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেই গত দুই দিনে দুই কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

আলমডাঙ্গা, জীবননগর ও দামুড়হুদার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

জেলার জনপ্রিয় দই-মিষ্টির দোকান যেমন কালিপদ মিষ্টান্ন ভান্ডার, কাশফুল, মিঠাই বাড়ি, খন্দকার সুইটস ও মিষ্টিমুখে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। এসব দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

ব্যবসায়ীরা জানান, সাদামিষ্টি, কালোজাম, চমচম, রসগোল্লা, খির চমচম, স্পঞ্জ মিষ্টি ও ছানা মিষ্টির চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। অভিজাত ক্রেতারা বিশেষ ধরনের দই ও ছানার মিষ্টির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। এছাড়া অনেকে টক নিয়েছেন নিজ বাড়িতেই দই তৈরির জন্য।

মিষ্টির কারিগররা জানান, চাহিদা মেটাতে তারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এক দোকানে দুদিনে মণকে মণ দই বিক্রির তথ্যও পাওয়া গেছে।

Advertisement

চুয়াডাঙ্গার কাশফুল মিষ্টির দোকানের স্বত্বাধিকারী অপু বলেন, আমাদের পাঁচজন কর্মচারী দিনরাত কাজ করেও চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।

এদিকে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ঈদের মৌসুমে দুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

খন্দকার সুইটসের মালিক সৌরভ বলেন, বিক্রির চাপ প্রচুর, কিন্তু পর্যাপ্ত দুধ না পাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।

অন্যদিকে, ক্রেতারাও জানান, প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে অনেকেই দই কিনতে এসে খালি হাতে ফিরেছেন।

শহরের বনানী পাড়ার সাকিব নামের একজন বলেন, দুপুরে এসে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়েও দই পাইনি, তাই মাঝরাতে আবার এসেছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির নেতা সুমন পারভেজ খান বলেন, এবারের ঈদে পুরো জেলাজুড়ে কোটি টাকার বেশি দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।

চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মনজুরুল ইসলাম লার্জ বলেন, এবার জেলায় কোটি কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অবশ্যই আনন্দের খবর।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দই-মিষ্টি শিল্পে আরও উন্নয়ন সম্ভব হবে। তবে দুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করাই আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

হুসাইন মালিক/এফএ/এমএস