লাইফস্টাইল

চাঁদরাতের আতশবাজি কি আনন্দ না আতঙ্ক

চাঁদরাতের আতশবাজি কি আনন্দ না আতঙ্ক

ঈদের চাঁদ উঠেছে। খবর পেয়েই পাড়ার ছোট শিশু আর তরুণরা মেতে উঠেছে আতশবাজির উৎসবে। ঈদ উৎসব মানে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটানো, সুস্বাদু খাবার আর নতুন পোশাকে সেজে উঠা।

Advertisement

কিন্তু এই উৎসবের আগের রাতেই অনেকে আতশবাজি ও পটকা ফুটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে বিপদ ডেকে আনেন নিজের ও অন্যের জীবনে। কেননা এই রঙিন বিস্ফোরণের পেছনে লুকিয়ে আছে ভয়াবহ বিপদ, স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব-

জীবনহানির ঝুঁকি

প্রতি বছর ঈদের সময় পটকা বা আতশবাজি ফোটানোর কারণে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে আসে। হঠাৎ বিস্ফোরণে হাত-পা উড়ে যাওয়া, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এমনকি মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে শিশুরা নিরাপদ দূরত্ব না জেনে বাজি ফোটালে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দূষণ

আতশবাজি থেকে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক যেমন সীসা, ক্যাডমিয়াম ও সালফার ডাই-অক্সাইড শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে। এটি হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট এবং ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়া বাজির তীব্র শব্দ কানে ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।

Advertisement

পরিবেশের উপর প্রভাব

আতশবাজি থেকে বের হওয়া ধোঁয়া বায়ুদূষণ বাড়ায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। রাসায়নিক পদার্থ মাটি ও পানিতে মিশে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। পাশাপাশি, বাজি ফোটানোর পর রাস্তায় পড়ে থাকা কাগজ ও প্লাস্টিকের আবর্জনা পরিবেশ দূষিত করে।

প্রাণীদের উপর নিষ্ঠুর প্রভাব

পশু-পাখিরা তীব্র শব্দে আতঙ্কিত হয়ে যায়। পোষা প্রাণীরা ভয়ে পালিয়ে যেতে পারে, এমনকি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় মারা যেতে পারে। পাখিরাও শব্দের কারণে দিকভ্রষ্ট হয়ে যায়, যা তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

আনন্দ প্রকাশের জন্য আতশবাজি বা পটকা ফোটানোই একমাত্র উপায় নয়। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, গান-বাজনা, রঙিন লাইট দিয়ে ঘর সাজানো কিংবা গল্প করার মাধ্যমেও ঈদের রাতকে স্মরণীয় করে তোলা যায়।

ঈদ হলো সুখ, শান্তি ও সম্প্রীতির উৎসব। আতশবাজির ক্ষণিকের চমক আমাদের পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আসুন, আমরা সচেতন হই এবং নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধবভাবে ঈদ উদযাপন করি। প্রকৃত আনন্দ শেয়ার করার মধ্যেই নিহিত, বিস্ফোরণের শব্দে নয়।

Advertisement

এএমপি/এমএস