ফিতরা আদায় হওয়ার জন্য ফিতরাদাতার নিয়ত জরুরি, ফিতরা গ্রহণকারীর জানা জরুরি নয় যে তাকে ফিতরা দেওয়া হচ্ছে। তাই ঈদ সালামি, বখশিশ, হাদিয়া, ঈদ উপহার, ইত্যাদি যে কোনো কিছু বলে ফিতরা গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে ফিতরা পৌঁছে দিলে ফিতরা আদায় হয়ে যাবে।
Advertisement
এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যাকে সালামি বলে ফিতরা দেওয়া হচ্ছে সে যেন ফিতরা গ্রহণের উপযুক্ত দরিদ্র ব্যক্তি হয়। কোনো সম্পদশালী ব্যক্তি বা সম্পদশালী ব্যক্তির শিশু সন্তানকে ফিতরা দিলে ফিতরা আদায় হবে না।
দরিদ্র ব্যক্তির শিশু সন্তানকে ফিতরা দেওয়া যেতে পারে। তবে শিশু যেহেতু টাকা-পয়সার রক্ষণাবেক্ষণ করতে অক্ষম, তাই ফিতরার টাকা এমন অবস্থায় শিশুর হাতে দেওয়া যাবে না যে, শিশু তা নিয়ে অনর্থক কাজে নষ্ট করবে বা হারিয়ে ফেলবে। ফিতরার টাকা শিশুর বাবা বা অভিভাবকের হাতে দিতে হবে অথবা এমন অবস্থায় শিশুর হাতে দিতে হবে যেন তা তার বাবা বা অভিভাবকের কাছে পৌঁছে, নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।
রমজান ও ইদুল ফিতরের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা। সম্পদশালী মুসলমানদের পাশাপাশি দরিদ্র মুসলামানরাও যেন ইদের আনন্দে শামিল হতে পারে, সে জন্য আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা ইদুল ফিতরের দিন ফিতরা আদায় আবশ্যক করেছেন।
Advertisement
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রোজাদারের অনৰ্থক কথাবার্তা ও অশালীন আচরণের কাফফারাস্বরূপ এবং গরিব-মিসকিনদের আহারের সংস্থান করার জন্য ফিতরা ফরজ করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি ইদের নামাজের আগে তা পরিশোধ করে আল্লাহর কাছে তা গ্ৰহণীয় দান। আর যে ব্যক্তি ইদের নামাজের পর তা পরিশোধ করে, তাও দানসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি দান। (সুনানে আবু দাউদ: ৬৩০)
ইদুল ফিতরের দিন সকালে যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, ব্যবসাপণ্য, বসবাস ও খোরাকির জন্য প্রয়োজনীয় নয় এমন জমি, বসবাসের অতিরিক্ত বাড়ি, অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র) মালিক থাকে, তার ওপর ওয়াজিব হয় তার নিজের পক্ষ থেকে এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা।
অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ে সম্পদশালী হলে তার ফিতরা তার সম্পদ থেকে আদায় করাই নিয়ম। তবে বাবা চাইলে নিজের সম্পদ থেকেও তা আদায় করে দিতে পারেন।
এ বছর ফিতরা কত টাকা?
Advertisement
হাদিসে নবিজি (সা.) উন্নত মানের খেজুর, মধ্যম মানের খেজুর, কিসমিস, পনির ও গম -এই পাঁচটি খাদ্যদ্রব্যের যে কোনো একটির মাধ্যমে ফিতরা আদায় করার অনুমতি দিয়েছেন। এগুলোর মূল্য অনুযায়ী ফিতরার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারিত হয়। এ বছর (রমজান ১৪৪৬ হিজরি মোতাবেক ২০২৫ খৃষ্টাব্দ) বাংলাদেশ সরকারের ফিতরা নির্ধারণ কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ফিতরার পরিমাণ জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ওএফএফ/এএসএম