মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১,৬০০ ছাড়িয়েছে। স্থানীয়রা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। প্রাচীন রাজধানী ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যেখানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বাস।
Advertisement
এদিকে, ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সরঞ্জামের অভাব, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং সড়ক-সেতু ধ্বসে পড়া। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, ইয়াঙ্গুন-নাইপিদো-মান্দালয় মহাসড়কে ফাটল ও বিকৃতির কারণে পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দুই ব্যক্তি ইট-পাথর সরিয়ে কংক্রিট স্ল্যাবের নিচে আটকে পড়া এক তরুণীকে উদ্ধার করছেন। মান্দালয়ে ১২ তলা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ধসে যাওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তবে রেড ক্রসের মতে সেখানে আরও ৯০ জন আটকা পড়ে থাকতে পারেন।
মান্দালয়ের কাছে একটি কিন্ডারগার্টেন ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১২টি প্রি-স্কুল শিশু ও এক শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা জানিয়েছে, হাসপাতালগুলো লাশ রাখার জায়গা সংকটে পড়েছে।
Advertisement
২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা দেশের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। জান্তা বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেই ভূমিকম্পের সময় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ এই হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
জান্তা বিরলভাবে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানালেও ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে এখনো তা পৌঁছায়নি। মান্দালয় বিমানবন্দর অচল থাকায় ও সাগাইংয়ের সেতু ধসে যাওয়ায় উদ্ধারকারী দলগুলোও আটকা পড়েছে।
এই ভূমিকম্প যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
সূত্র: বিবিসি
Advertisement
এসএএইচ