বছর ঘুরে চলে এলো ঈদ। আর এবারের ঈদের আনন্দকে আরও দিগুণ করে তুলেছে লম্বা ছুটি। এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে যান্ত্রিক শহরের কোলাহল থেকে বেরিয়ে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির মাঝে। তবে অনেকেই দূরে কোথাও যেতে চান না জার্নি করার ভয়ে। তারা চাইলে ঘুরতে যেতে পারেন রাজধানীর আশপাশের পর্যটক স্পটে। চলুন জেনে নেই এই ছুটিতে রাজধানীর আশপাশে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়।
Advertisement
বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকার নবাবদের আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত স্থান আহসান মঞ্জিল। এই ঈদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নবাবদের আভিজাত্যের ছোঁয়া উপভোগ করার মতো মজা আর হবে না।
বাংলার তাজমহলসোনারগাঁতেই অবস্থিত তাজমহলের প্রতিরূপ। মাত্র ১৫০ টাকার এক টিকিটে দুই মুভির মতো, বাংলার তাজমহলের সঙ্গে বাংলার পিরামিড দর্শন করতে পারবেন। এটি রাজধানী থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্বে সোনারগাঁয়ের পেরাবে নির্মিত হয়।
জিন্দা পার্কপূর্বাচল হাইওয়ের কাছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত জিন্দা পার্ক। কম সময় ও কম খরচে একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন সেখানে। সারাদিন প্রকৃতির মাঝে ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে গেলে রয়েছে রাত কাটানোর সুযোগও। খাবার নিয়েও চিন্তা করতে হবে না। পার্কের ভেতরেই রয়েছে রেস্টুরেন্ট।
Advertisement
ঢাকার অদূরে অবস্থিত গোলাপ গ্রাম। রাজধানী থেকে গোলাপ গ্রামে যাওয়ার জন্য প্রথমেই মিরপুর মাজার রোড হয়ে বেড়িবাঁধ সড়কে যাবেন। সেখান থেকে বাস, টেম্পো, অটোরিকশা বা রিকশায় চড়তে হবে। এরপর বেড়িবাঁধ তুরাগের তীর তথা শিন্নিরটেক ঘাট থেকে ট্রলারে উঠে পৌঁছে যাবেন সাদুল্যাপুর ঘাটে। শুকনো মৌসুমে নদী পার হয়ে বেশ খানিকটা পথ হাঁটলে দেখা মিলবে গোলাপ গ্রামের।
আরও পড়ুন:
রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়িতে যা যা দেখলাম মনের ভেতর উচ্ছ্বাসের ঢেউ জাহানাবাদে একদিনে যা দেখবেন জল জঙ্গলের কাব্যগাজীপুরের পুবাইলে অবস্থিত জল জঙ্গলের কাব্য। খোলামেলা গ্রামীণ পরিবেশ উপভোগ করতে চাইলে এ জায়গা আপনার জন্য হতে পারে আদর্শ। এখানে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা ও রাতের খাবারসহ সব সুবিধা পেয়ে যাবেন একসঙ্গে।
পদ্মা রিসোর্টঅল্প সময়ে এই ব্যস্ত নগরী থেকে দূরে যেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন সুন্দর ওই স্থানে। কটেজের ভেতরে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, রিভার ক্রুজ ও খেলাধুলা করার বিশাল জায়গা।
Advertisement
ঢাকা থেকে পরিবার পরিজনদের নিয়ে সময় কাটানোর জন্য যেতে পারেন নরসিংদীতে অবস্থিত ড্রিম হলিডে পার্কে। সারাদিন হৈচৈ আর আনন্দে মাতামাতি করতে অথবা পিকনিক করতে চাইলে এই ছুটিতেই চলে যেতে পারেন ড্রিম হলি যে পার্কে। এখানে রাতে থাকার জন্যও রয়েছে রিসোর্টের সুব্যবস্থা।
বালিয়াটি জমিদার বাড়িমানিকগঞ্জের বালিয়াটি গ্রামে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এখানের বিশাল সব স্থাপনা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
যমুনা রিসোর্টটাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝে যমুনা সেতুর কাছে অবস্থিত যমুনা রিসোর্ট। অল্প সময়ের মধ্যে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন এই রিসোর্টে। এখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে সুইমিং পুল, খেলাধুলার ব্যবস্থা, জিম ও অন্যান্য সুবিধা।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। দুর্লভ সব দৃশ্য দেখা যায় এই পার্কে। দারুণ সব অভিজ্ঞতার জন্য পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই পার্কে।
নিকলী হাওরকিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। ঢাকা থেকে নিকলী হাওরে যেতে খুব বেশি ভোগান্তিতে পরতে হবে না আপনাকে। প্রথমে ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জ শহরে, সেখান থেকে সিএনজিতে যেতে পারেন নিকলী ঘাটে। ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখুন হাওর। মিশে যান প্রকৃতির মাঝে।
নকশী পল্লীপূর্বাচর বালু নদীর পাশে অবস্থিত নকশী পল্লী। এটি মূলত একটি রেস্তোরা। তবে এখানকার পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে আপনাকে। এমনকি বোটে করেও ঘুরে বেড়াতে পারবেন নদীতে।
মহেরা জমিদার বাড়িএই ঈদের লম্বা ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন টাঙ্গাইলে। এই জেলায় ঘুরার জন্য বেশ কয়েকটি স্থান আছে। তবে সবচেয়ে বেশি সুন্দর মহেরা জমিদার বাড়ি। তিন স্থাপনা বিশিষ্ট এই বাড়ির ভেতরের দিকে বিশাল খাঁচায় বিভিন্ন রকম পাখি পালা হয়। প্রতিটি স্থাপনায় অসাধারণ কারুকার্য করা। এসব কারুকার্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
মৈনট ঘাটযারা সমুদ্র মিস করছেন তারা অল্প সময়ের জন্য ঘুরে আসতে পারেন মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটে। দোহার উপজেলায় অবস্থিত এই চর আপনাকে সাগরের বেলাভূমির কথা মনে করিয়ে দেবে। এখানকার সূর্যাস্তের সুন্দর দৃশ্য দেখে মনে হবে আপনি সমুদ্রসৈকতে আছেন। এছাড়া পদ্মার ইলিশ কিংবা নৌকায় ঘোরার ইচ্ছা থাকলেও মৈনট ঘাটে যেতে পারেন।
জেএস/এমএস