জাতীয়

চাঁদাবাজি কমলেও ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় বেড়েছে

চাঁদাবাজি কমলেও ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় বেড়েছে

ঈদযাত্রায় ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাওয়া ৯৮ শতাংশ গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

Advertisement

ঈদযাত্রা সামনে রেখে গত ২০ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সমিতির পর্যবেক্ষণ টিমের সদস্যরা ঢাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টার, লঞ্চঘাট, বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন ঘুরে এমন তথ্য পেয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, এবার ঈদযাত্রায় গণপরিবহনে চাঁদাবাজি কমেছে। তারপরও বিগত বছরগুলোর ঈদযাত্রার চেয়েও এবার বাড়তি ভাড়া আদায়ের হার বেড়েছে।

বুধবার (২৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষ থেকে এ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

Advertisement

বিগত ১৬ বছর যাবত আওয়ামী লীগ সরকারের একজন মন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিতেন। তাতে কাজের কাজ কিছুই হতো না। এবার সরকার বদল হয়েছে। তবুও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হয়নি- মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী

সংবাদ সম্মেলনে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর যাবত আওয়ামী লীগ সরকারের একজন মন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিতেন। তাতে কাজের কাজ কিছুই হতো না। এবার সরকার বদল হয়েছে। তবুও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হয়নি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তবে ভাড়া না কমায় যাত্রীরা কোনো সুফল পাচ্ছেন না। বরং এবারের ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কোনো কোনো রুটে আগের চেয়েও অনেক বেড়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ঈদযাত্রা ঘিরে গত ২০ মার্চ থেকে আমাদের পর্যবেক্ষণ টিম মাঠে রয়েছে। তারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। তাতে দেখা গেছে, ৯৮ শতাংশ গণপরিবহনই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

কিছু অভিযোগ তুলে ধরে মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ঢাকা-বরগুনা রুটে নিয়মিত ভাড়া ৫০০ টাকা। সেটা এখন এক হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। ঢাকা-রংপুর রুটে শ্যামলী পরিবহনের এসি বাসে ৮০০ টাকার ভাড়া ১৫০০ টাকা গতকাল পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। একই রুটে হানিফ এসি বাসে ১৫০০ টাকার ভাড়া আড়াই হাজার; কোনো কোনো কাউন্টারে তা তিন হাজার টাকাও আদায় চলছে।

‘তাছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে গ্রীন সেন্টমার্টিন এসি স্লিপারে নিয়মিত ভাড়া ১৫০০ টাকা। অথচ গতকাল আদায় করা হয়েছে দুই হাজার টাকা। ঢাকার গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। একইভাবে ট্রেন, নৌপথ এবং আকাশপথে বাড়তি ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সমিতির মহাসচিব আরও বলেন, ঢাকা শহরে অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ও ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদযাত্রায় কেবল ৮৩২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে। আন্তঃজেলাসহ সারাদেশে সব মহানগর হিসেবে আনলে তা আরও ১০ গুণ বাড়বে। এমন লুটপাট বন্ধে যাত্রীদের নিয়ে শক্তিশালী তদারকি টিম গঠনের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আহমদ, অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, মোহাম্মদ আরিফ প্রমুখ।

এএএইচ/এমএইচআর/এএসএম