রাজনীতি

ওরা গাড়িবহর নিয়ে যা-ই করুক, বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে

ওরা গাড়িবহর নিয়ে যা-ই করুক, বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে

নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা একশ গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যায় তারা কী করবে সেটা আমরা ভালো বুঝি।

Advertisement

তিনি বলেন, ওরা গাড়িবহর নিয়ে যা করুক, সমস্যা নেই। আমরা জানি ওরা কী করতে পারবে। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের বারবার বলতে হবে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করতো না। আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং, আওয়ামী লীগকে আর কোনো গণতন্ত্রের সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারি না।

Advertisement

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, অতীতে ছিল, ভবিষ্যতে থাকবে এবং বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনারা সঠিকভাবে, সুন্দরভাবে… জনগণ যেন ভালোবেসে আপনাদের সেই কাজগুলো (জনকল্যাণমূলক) করতে থাকুন। জনগণ যাতে বিএনপিকে ভালোবাসে, বিএনপির কাছে আসে- সেই কাজগুলো আমরা করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ মার্চের এই কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। হত্যা করেছে লাখো নিরীহ মানুষকে। কিন্তু পাকিস্তান এখনো ক্ষমা চায়নি। এ কথা বলছি এ কারণে, একটি গোষ্ঠী এ বিষয়ে আমলে নিচ্ছে না। তারা বলছে, ৭১ কোনো ঘটনা নয়। তারা বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে। তাদের নাম বলতে চাই না। এখন তারা আবার গলা ফুলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছে। ইতিহাস তো ইতিহাস। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এটাই এদের চরিত্র। ওরা দেখে, জনগণ যখন ক্ষেপে ওঠে তখন ওরা এভাবে কর্মীদের অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যায়। এবার তাই করেছে, জনতার ক্ষোভে ভারতে পালিয়ে গেছে।

‘বাংলাদেশের মহীয়সী নারী খালেদা জিয়া প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে ৯ মাস জেলে ছিলেন।’

Advertisement

আরও পড়ুন অর্থনীতির সবখানেই জিয়াউর রহমানের স্পর্শ রয়েছে: রিজভী মাসউদের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির লজ্জিত হওয়া উচিত

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংস্কার প্রথম শুরু হয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে, পরে করেছেন খালেদা জিয়া। দেশের মৌলিক সংস্কার কিন্তু বিএনপির হাত দিয়েই। এখন ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছেবিএনপি, ২০১৬ সালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিয়েছেন। সংস্কার কোনো নতুন বিষয় নয়। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের পাহাড় এনেছে। আমরা সংস্কারের প্রস্তাবনায় মতামত দিয়েছি, পক্ষে-বিপক্ষে। আমরা বলেছি, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এটি নিয়ে আজ ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কুতুবের আবির্ভাব হয়েছে। তারা যে বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চায় আমাদের জানা নেই। দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। যেটা আমরা মেনে নেবো না। কারণ সেনাবাহিনী দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, আন্দোলনের ভিত্তি তো বিএনপি করেছে। হঠাৎ করেই একটা বিপ্লব হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মধ্যে উঠে এসেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি খারাপ কাজ করে এমন কথা যেন না শুনতে হয়। এতে সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে। আগামীর বাংলাদেশ আপনাদের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বাস করি, ওরা (এনসিপি) গাড়িবহর নিয়ে যা করুক, সমস্যা নেই। আমরা জানি ওরা কী করতে পারবে। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য আমরা সফল করতে পারিনি। দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বারবার হোঁচট খেয়েছি।

বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষিত ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে, অছিলা সামনে আনার চেষ্টা করেছে। জনগণ সন্দেহ পোষণ করছে, আমরা কিন্তু বুঝি। কেউ বলছে সংস্কার আবার কেউ বলছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এগুলো বলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্ব করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। দেশ নির্বাচনমুখী হলে যত ষড়যন্ত্র আসুক না কেন, জনগণ তা মোকাবিলা করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা মনে করেছিলাম স্বৈরাচার পতনের মধ্যে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ফিরে পাবো। তবে এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে প্রশ্নের সম্মুখীন করা হচ্ছে। নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার হীন চেষ্টা হচ্ছে। এখন দেখছি বিএনপি যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, বিএনপিকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কেএইচ/কেএসআর/এএসএম