ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে এখনও জমে উঠেনি বেচাকেনা। কোথাও উপচেপড়া ভিড় হলেও কোথাও আবার ফাঁকা। বিশেষ করে রাজধানীর ধানমন্ডির ছোট ছোট শপিংমলগুলোতে এখনও ক্রেতার আনাগোনা নেই। অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেওয়া নিয়ে শঙ্কা তাদের।
Advertisement
শুক্রবার (২১ মার্চ) ধানমন্ডির মেট্রো শপিংমল ও এ.আর প্লাজা ঘুরে বেচা-বিক্রির এমন চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণত ১৫ রোজা পার হলেই ধুম পড়ে যায় ঈদের কেনাকাটার। অথচ ২০ রোজা পার হলেও ক্রেতা কম। বাকি দিনগুলো নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।
ছুটির দিনে সকাল থেকেই ভিড় হওয়ার কথা। অথচ চিত্র তার উল্টো। বিক্রির আশায় দোকান খুলে বসে আছেন কেউ কেউ। কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতার দেখা নেই। হাতে গোনা দু-একজন ক্রেতা এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করলেও অধিকাংশ বিক্রেতা বসে আছেন।
Advertisement
আরও পড়ুন:
ভারতের শাড়ি ও পাকিস্তানের সারারা-গারারার চাহিদা বেশি মেয়েদের পছন্দ পাকিস্তানি থ্রি পিস, ছেলেদের কাশ্মীরি পাঞ্জাবি বাড়ছে ভিড়, সাধ্যের মধ্যে মিলছে না পছন্দের পোশাকম্যাকয় নামের গার্মেন্টস পণ্যের একটি শো-রুমের বিক্রয় কর্মী ইমরান হোসেন বলেন, এ বছর ঈদের বিক্রি খুবই কম। তবে আশা করা যায় সামনে বেচাকেনা বাড়বে। তিনি বলেন, ছুটির দিন নামাজের পর সাধারণত ক্রেতার সংখ্যা বাড়ে। আর সন্ধ্যার দিকে ইফতারের পর ক্রেতার চাপ হয় বেশি।
স্টাইল ফ্লেক্স এর বিক্রয়কর্মী মো. ফাহিম বলেন, বেচাকেনার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। সারাদিনে ১০ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারি না। লজ্জায় মালিকের কাছে বেতন-বোনাস চাইতে পারছি না। এখন দেখছেন এক, দুইজন কাস্টমার, কিন্তু আরেকটু পর আর থাকবে না।
ছুটির দিনে বিক্রি কেমন হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছুটির দিন এক লাখ টাকা বিক্রি করার আশা। কিন্তু সেই আশা তো আর পূরণ হয় না। এই মার্কেটের সবারই একই অবস্থা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হওয়া প্রয়োজন। ২০ রোজা পর্যন্ত একদিনও এর ধারে কাছে যেতে পারিনি। এমন দিন গেছে যে, খালি হাতেও বের হতে হয়েছে। দেশে খাবারের দাম বেড়েছে, সব খরচ বেড়েছে। কিন্তু টাকার দাম বা আমাদের বেতন কিন্তু বাড়েনি। সবকিছু থেমে গেছে।
Advertisement
এ. আর প্লাজার ম্যান ওয়ান দোকানের তাহসিন বলেন, মার্কেট ঘুরেই তো বুঝতে পারছেন কেমন বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কাস্টমার নেই। সকাল থেকে এসে বসে আছি।
এআর ফ্যাশন-এর মো. শুভ বলেন, এ বছর পুরো মার্কেটে কোনো বেচাকেনা নেই। দিনে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়জনের কাছে বিক্রি করতে পারলেও দোকান ভাড়ার টাকা কিছুটা হয়।
আরও পড়ুন:
ঈদে জমজমাট পণ্য কেনাকাটার অনলাইন হাটক্রেতা না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমত আমার কাছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ এই জন্য মনে হচ্ছে। দ্বিতীয়ত যাদের কাছে টাকা আছে তারা বের করতে চাইছে না। যারা কেনাকাটা করার মতো তারা অধিকাংশ ঢাকার বাইরে বা দেশের বাইরে আছে বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের যে পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে মানুষের নিরাপত্তা নেই। যেখানে মানুষের নিরাপত্তা নেই সেখানে মানুষ শপিং দিয়ে কী করবে? মানুষ যে টাকা নিয়ে শপিং করতে বের হবে কীভাবে হবে? প্রতিটা এলাকাতে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতি হচ্ছে।
কেআর/এসএনআর/এমএস