দেশজুড়ে

মশার নগরী খুলনায় কয়েল এখন নিত্যসঙ্গী

খুলনা মহানগরীতে মশার উপদ্রব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মশার অত্যাচারে জনজীবন চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই মশা। বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা অফিস সবখানেই মশার উৎপাত। সার্বক্ষণিক কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ নিয়ে লাগাতার অভিযোগ থাকলেও কেসিসির নেই কোনো মাথাব্যথা।

Advertisement

নগরবাসীর অভিযোগ, দিন নেই রাত নেই মশা থেকে বাঁচার জন্য কয়েল নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। অনেক অভিযোগের পর কিছু জায়গায় মশার ওষুধ দিলেও মশার উপদ্রব কমছে না। ভেজাল ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ নগরবাসীর মুখে মুখে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে মশারি মিছিল পর্যন্ত করেছেন নাগরিক সমাজ। কিন্তু মশা নিধনে কার্যকরী কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা কেসিসিকে নিতে দেখা যায়নি।

খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, খুলনা মহানগরীতে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। ৩১টি ওয়ার্ড জুড়ে প্রায় এক হাজার ২০৬ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এসব ড্রেনের মশা নিধনে ডিজেল, স্যাভলন, সার্ভিসাইড, অ্যাডাল্টিসাইড ও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়।

Advertisement

নগরীর টুটপাড়ার বাসিন্দা শফিকুল আলম বলেন, মশার অত্যাচারে রমজান মাসে কয়েলের ধোয়া পেটে যেতে যেতে গ্যাস হয়ে গেছে। দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। সিটি করপোরেশনে থাকা আর না থাকা সমান কথা।

সোনাডাঙ্গা আবাসিকের বাসিন্দা হেলেনা খাতুন বলেন, দিনরাত যাই হোক মশা থেকে রক্ষার উপায় নেই। কেসিসির দেওয়া মশার ওষুধের গন্ধে মানুষ অজ্ঞান হলেও মশা মরবে না।

তিনি আরও বলেন, সকাল নেই রাত নেই বিশ্রাম নিতে গেলেও মশারি টাঙিয়ে নিতে হয়। নইলে মশার কবল থেকে রক্ষার সুযোগ নেই।

ডাকবাংলো মার্কেটের ব্যবসায়ী আফসার উদ্দিন বলেন, মশার যন্ত্রণায় দুই মিনিট দাঁড়ানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। পায়ে এসে মশার ভিড় জমে যায়। প্রতিদিন হিসাব ছাড়া কয়েল লাগে।

Advertisement

দৌলতপুরের বাসিন্দা মজিবর হোসেন অভিযোগ করে জানান, মশক নিধনে মানহীন ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে। অপরিচ্ছন্ন ড্রেন, নর্দমা, যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা, উন্নয়নকাজের ধীরগতিতে খুলনা মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মশক নিধনে সিটি করপোরেশনকে আরও কঠোর হতে হবে।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, মশা নিধনে কেসিসি সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মশার উপদ্রব স্থায়ীরূপ লাভ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়াসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, মশক নিধনে সিটি করপোরেশন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। কেসিসির পর্যাপ্ত ওষুধ ও উপকরণও রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নগরজুড়ে ওয়াসার নির্মাণাধীন স্যুয়ারেজ লাইনে প্রচুর মশা জন্ম নিচ্ছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি। দ্রুত মশা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।

এফএ/জিকেএস