প্রবাস

ডা. জাকির নায়েক কি মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন?

মালয়েশিয়ায় ফের আলোচনায় ডা. জাকির নায়েক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, ডা. জাকির নায়েককে নাগরিকত্ব দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। ফেসবুক পোস্টে মালয়েশিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে জাকির নায়েকের একটি ছবিও জুড়ে দিচ্ছেন নেটিজেনরা।

Advertisement

তবে বিষয়টিকে পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ডা. জাকির নায়েককে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এটি একটি ভুয়া পোস্ট, যা ছয় বছরেরও বেশি সময় আগে তৈরি করা হয়েছিল।

পোস্টে ব্যবহৃত ছবিতে দেখা যায়, তখনকার পেরকাসা প্রধান ইব্রাহিম আলি ডা. জাকির নায়েককে ‘পাহলাওয়ান পেরকাসা’ পুরস্কার দিচ্ছেন।

Advertisement

দেশটির শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে জানিয়েছে, ইব্রাহিম আলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যাখ্যা করেন, ছবিটি ২০১৭ সালে তোলা হয়েছিল, যখন পেরকাসা ইসলাম প্রচারে অবদানের জন্য জাকির নায়েককে সম্মানিত করেছিল। এর সঙ্গে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উসকে দেওয়ার জন্য করা হয়েছে।

আরও পড়ুন স্টারলিংক বনাম বাংলাদেশ স্যাটেলাইট: ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মালয়েশিয়ার চলচ্চিত্র শিল্পের নেতৃত্বে বাংলাদেশি জাফর ফিরোজ

২০০৮ সালে মালয় অধিকার সংগঠন পেরকাসা প্রতিষ্ঠা করেন ইব্রাহিম আলি। ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমরা সবাই জানি জাকির নায়েক একজন পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট (পিআর) হিসেবে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি এখানে নাগরিকত্ব চান না এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছেন, যাতে সবকিছু সমাধান হয়ে গেলে তিনি ভারতে ফিরে যেতে পারেন।’

পেরকাসা প্রধান ইব্রাহিম আলির কাছ থেকে পাহলাওয়ান পেরকাসা পুরস্কার গ্রহণ করছেন ডা. জাকির নায়েক/ছবি- সংগৃহীত

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সাল থেকে ডা. জাকির নায়েককে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছিলেন, ‘যতক্ষণ না জাকির নায়েক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করছেন, ততক্ষণ তাকে ভারতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।’

Advertisement

ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে আরও জানিয়েছে, ২০১৫ সালে বারিসান ন্যাশনাল সরকার ডা. জাকির নায়েককে মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা দেয়।

২০১৭ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পাওয়ার পর তিনি মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা করছেন। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, তখনো তার নাগরিকত্বের আবেদন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এছাড়া, ২০১৯ সালে কোটা বারুতে এক বক্তৃতায় মালয়েশিয়ার হিন্দু ও চীনা সম্প্রদায় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাকে মালয়েশিয়ায় প্রকাশ্যে বক্তৃতা দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। তবে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন জানান, ডা. জাকির নায়েকের জনসমক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

কেএসআর/এএসএম