ঢাকা কলেজের ছাত্র সিফাত আলী। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরছেন ঈদ করতে। ভেবেছিলেন বেশি ভাড়া ও নতুন সেতু ব্যবহারে কমবে সময়। কিন্তু প্রথম যাত্রায় ট্রেনটি বিলম্ব করে ২০ মিনিট। ফলে বেশ হতাশ ও ক্ষুব্ধ তিনি।
Advertisement
তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে টিকিট কেটেছি। ৪৫ টাকা বেশি দিয়ে টিকিট কেটে এখন দেখি আগের থেকেও খারাপ অবস্থা। প্রায় ৬ ঘণ্টাই লেগে গেলো। রাজশাহী পৌঁছানোর কথা ছিল ১১টা ৪০ মিনিটে, কিন্তু পৌঁছালাম ১২টায়। তাহলে লাভ কী হলো। অযথা আমাদের বেশি টাকা দিতে হলো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে বেশি টাকা নিচ্ছে নিক। তারা বলেছে তিন মিনিটেই ট্রেনটি যমুনা পার হচ্ছে। যেখানে আগে ৩০ মিনিট লাগতে। তাহলে এই অতিরিক্ত সময় তারা কী করলো। আগের মতোইতো সময় লাগছে। এই বেশি ভাড়া যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে নেওয়া হচ্ছে।
কাপড় ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, বেশি টাকা নিয়েছে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তারা যে সময় দিয়েছে সেটি তারা রাখতে পারেনি। এমনকি আগে সাড়ে ৫ ঘণ্টার মধ্যেই চলে আসতো। এখনতো দেখি ৬ ঘণ্টা লাগছে। তাহলেতো পুরোনো সেতুই ভালো।
Advertisement
সিফাত আর এনামুলের মতো ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ট্রেনের প্রায় সব যাত্রীরই একই অভিযোগ। প্রথম যাত্রাতেই দেরিতে রাজশাহী পৌঁছেছে ধূমকেতু এক্সপ্রেস।
পশ্চিম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন যমুনা রেলসেতুর জন্য ঢাকা থেকে রাজশাহীসহ এই রুটে চলাচলকারী সব ট্রেনেই ৩৯ কিলোমিটার বাড়তি দূরত্ব অতিক্রম করতে হচ্ছে। এই বর্ধিত ৩৯ কিলোমিটার সেতুর ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে।
রেলওয়ে নির্ধারিত নতুন বর্ধিত ভাড়ার তালিকা (ভ্যাট ব্যতীত) অনুযায়ী দেখা যায়, রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে চলাচলকারী বনলতা এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস ও ধূমকেতু এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ারের চলমান ভাড়া ৪০৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫০ টাকা। এতে প্রতি আসনে ৪৫ টাকা বেড়েছে। এসি চেয়ারে ভাড়া ৬৭০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫০ টাকা, প্রতি আসনে বেড়েছে ৮০ টাকা। এসি সিট ৮০৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯০০ টাকা। প্রতি আসনে বেড়েছে ৯৫ টাকা। এসি বার্থ ১২০৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩৪৫ টাকা। প্রতি আসনে বেড়েছে ১৪০ টাকা।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার শহিদুল আলম বলেন, আজ ধূমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহীতে পৌঁছানোর কথা ছিল ১১টা ৪০ মিনিটে। তবে সেটি হয়নি। নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পর ট্রেনটি পৌঁছেছে ১২টায়। তবে কী কারণে এটি দেরি হয়েছে সেটি বলতে পারছি না।
Advertisement
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মামুনুল ইসলাম বলেন, আজ ঢাকায় একটি অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা থেকেই ট্রেনটি লেট করেছে। এ কারণে লেট হয়েছে। আমরা সাধারণ যে কয়েকদিন ট্রেন ট্রায়াল চালিয়েছি সেই কয়েকদিন ২০ মিনিট অ্যাডভান্টেজ (সুবিধা) পেয়েছি। তবে আজ কোনো কারণে এটি দেরি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন সেতুটি ডাবল লাইনের। তবে রাজশাহী আব্দুলপুর সিঙ্গেল লাইন। ফলে যে সুবিধা পাওয়ার সেটি কম পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও ট্রেনের ইঞ্জিন-বগি এসব সমস্যার কারণেও লেট হচ্ছে। তবে আগামীতে হয়ত লেট হবে না।
সাখাওয়াত হোসেন/এফএ/এএসএম