আইন-আদালত

ওসমান পরিবারের ১২৬ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি শামীম ওসমানের পরিবারের প্রতিষ্ঠান ‘কে টেলিকমের’ শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি তথা সরকারের ১২৬ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সাখাওয়াত হোসেন নামের এক ভুক্তভোগীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ‘সরকারের পাওনা ১২৬ কোটি টাকা, ফাঁকি দিতে অভাবনীয় জালিয়াতি ওসমান পরিবারের’- এ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন

শামীম ওসমান-আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ফকিরাপুলের ডিআইটি রোডের একটি ভবনে ছোট একটি কক্ষে সাখাওয়াত হোসেনের ট্রাভেল এজেন্সির কার্যালয়। আসবাব বলতে শুধু একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার। ভাড়া ছয় হাজার টাকা। সাখাওয়াত ফকিরাপুলেই একটি মেসে থাকেন।

যদিও বিটিআরসির নথিপত্রে সাখাওয়াত ‘কে টেলিকম’ নামের (পরে ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস টেল লিমিটেড নামকরণ হয়) একটি ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ কোম্পানির অংশীদার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কে টেলিকমের’ কাছে বিটিআরসির পাওনা ১২৬ কোটি টাকার বেশি। কে টেলিকমের মালিক ছিল নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবার। শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও ছেলে ইমতিনান ওসমানের নামে ২০১২ সালে ১৫ বছরের জন্য কে টেলিকমের লাইসেন্স নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ এবং তার (শামীম ওসমান) ঘনিষ্ঠ জয়নাল আবেদীন মোল্লা ও জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লার মালিকানাও ছিল।

Advertisement

তবে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা সম্পর্কে সাখাওয়াত বলেন, ‘আমি নিজেই তো জানতাম না, আমি মালিক। গত ১৮ অক্টোবর বিটিআরসির কর্মকর্তারা রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থানার পুলিশ নিয়ে আমার গ্রামের বাড়িতে যান। তখনই আমি এই কোম্পানি ও নিজের মালিকানার কথা জানতে পারি।’

আরও পড়ুন

ডুপ্লেক্স বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপ, ‘দেশ ছেড়েছেন’ শামীম ওসমান

নথিপত্রে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট ওসমান পরিবার কে টেলিকমের মালিকানা সাখাওয়াত হোসেন, সিলেটের স্কুলশিক্ষক দেবব্রত চৌধুরী ও বগুড়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী রাকিবুল ইসলামের নামে হস্তান্তর করে। তারা জানিয়েছেন, তারা কেউই এ বিষয়ে জানতেন না। জালিয়াতি করে তাদের মালিক দেখানো হয়েছে।

বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সরকারের পাওনা টাকার দায় এড়াতে তড়িঘড়ি করে ওসমান পরিবার কে টেলিকমের মালিকানা ওই তিন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করে। এক্ষেত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। ভুয়া ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ওসমান পরিবারের এই কারসাজির সহযোগী ছিল।

তবে পরিবারসহ আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে শামীম ওসমানের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এফএইচ/এমকেআর/এমএস