মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের চা বাগানগুলো এখন উৎসবের রঙে রঙিন। বাগানে বাগানে চা-শ্রমিকেরা ফাগুয়ার রঙে মাতোয়ারা। এই ফাগুয়া উৎসব চা শ্রমিকদের অন্যতম বড় উৎসব। নাচ, গান, রঙ খেলাসহ নানা আয়োজনে এ উৎসব চলবে সপ্তাহব্যাপী।
Advertisement
সরেজমিনে উপজেলার খাইছড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চা বাগানের শ্রমিক কলোনীর অলিতে গলিতে নানান রঙের দাগ। ছোট ছোট শিশুরা সারা গায়ে রঙ মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতে রঙ নিয়ে ঘুরছে সবাই। বড়রাও বসে নেই। একে অন্যের গায়ে রং মাখিয়ে উৎসবের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। চা বাগানের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঐতিহ্যবাহী কাঠিনৃত্য পরিবেশন করছে চা কাঠি নৃত্যের দল। রাধাকৃষ্ণ বন্দনায় গুপিরা নানান গানে মাতিয়ে তুলছেন কাঠিনৃত্য।
শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া চা বাগানের তরুণ কাজল হাজরা ও কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখলা চা বাগানের প্রদীপ পাল বলেন, ছোট বেলায় ফাগুয়া আরও বড় পরিসরে হতো। প্রতিটি চা বাগান থেকে দুই-তিনটা কাঠি নাচের দল বের হতো। চা বাগানে প্রচুর রঙ খেলা হতো। এখন সেটা অনেক কমে গেছে।
স্থানীয় শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শারদীয় দুর্গা পূজার পর এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। ফাগুয়া উৎসবের দিনগুলো চা জনগোষ্ঠীর লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দে কাটানোর চেষ্টা করে। সব মিলিয়ে প্রায় প্রতিটি চা বাগানেই এক অন্যরকম আবহ বিরাজ করে।
Advertisement
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, চা শ্রমিকদের এই সংগ্রামী জীবনে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ফাগুয়া উৎসব। এটি চা জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে অন্যতম। ফাগুয়া শুরু হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্বামীর বাড়ি থেকে মেয়েরা বাবার বাড়িতে নাইওরে আসেন। চা বাগানের ঘরে ঘরে ভালো রান্না হয়। অনেক আনন্দ হয়। চা-শ্রমিকরা সারা বছর বিভিন্ন সমস্যায় ভুগলেও উৎসবের দিনগুলোতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু ভালো থাকার চেষ্টা করেন।
ওমর ফারুক নাঈম/এফএ/জিকেএস