চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাহিদুর রহমান জোয়ার্দ্দার ওরফে লোটাস জোয়ার্দ্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি টিম।
Advertisement
তবে এর আগে আদালত চত্বরে এক নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তিনি আদালতে গেলে সেখানে হাজির হন স্থানীয় জনতা। তাদের বিক্ষোভের মুখে প্রথমে লোটাস পুলিশের গাড়িতে উঠলেও পরে কোনোভাবে নেমে আদালত চত্বরে লুকিয়ে পড়েন। এরপর পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বড় বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
মোজাহিদুর রহমান জোয়ার্দ্দার ওরফে লোটাস জোয়ার্দ্দার (৪৬) আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের বটিয়াপাড়া গ্রামের জামশেদুর রহমানের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কানাপুকুর পাড়ায় বসবাস করেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি বলে জানায় পুলিশ।
জানা যায়, বিস্ফোরক, চুরি ও হামলার ঘটনায় পূর্বের একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অগ্রিম জামিনে ছিলেন মোজাহিদুর রহমান জোয়ার্দ্দার ওরফে লোটাস। ওই মামলার জামিনের মেয়াদ বাকি থাকতেই রোববার চুয়াডাঙ্গা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। জামিনের মেয়াদ পূর্ণ না হলে কোর্টে আত্মসমর্পণের বিধান না থাকায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন। জামিনের শুনানি না করে আদালত নতুন দিন ধার্য করলে লোটাস জোয়ার্দ্দার ফিরে যান। পরে চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার এলাকা থেকে সদর থানা পুলিশ অন্য একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ কারেন।
Advertisement
তবে আদালত প্রাঙ্গণে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে নানা নাটকীয়তা। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা এই আওয়ামী লীগ নেতা চুপিসারে আদালতে এলে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় জনতা বিষয়টি টের পেয়ে যায়। এরমধ্যে লোটাস জোয়ার্দ্দারের গ্রাম থেকে অনেক সাধারণ মানুষ কোর্ট চত্বরে জড়ো হন। তারা লোটাস জোয়ার্দ্দারের নামে নানা স্লোগানও দেন। এক পর্যায়ে কোর্ট চত্বরে সাধারণ জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়।
এসময় তিনি পুলিশের গাড়িতে উঠে বসেন এবং হঠাৎ গাড়ি থেকে নেমে আদালত চত্বরে লুকিয়ে পড়েন। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব আলী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ জানতে পারে কানাপুকুর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত একজন আসামি বড় বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে নেয়।
লোটাস জোয়ার্দ্দারকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ওই মামলায় জড়িত বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
Advertisement
হুসাইন মালিক/এফএ/জিকেএস