রাজনীতি

বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ধনী গরিবের ব্যবধান আরও বেড়েছে

বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ধনী গরিবের ব্যবধান আরও বেড়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিশিষ্ট ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ মোখলেছুর রহমান।

Advertisement

তিনি বলেন, কেউ কেউ কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, পক্ষান্তরে কারও আবার গাছতলায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে না। পুঁজিবাদী অর্থনীতির এই দুষ্ট চক্র থেকে বের হতে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ইনসাফ ও সমতার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের শহীদরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের নিমিত্তেই অকাতরে জীবন দিয়েছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার আলোকেই বৈষম্যহীন নতুন সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

রোববার (১৬ মার্চ) আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) উদ্যোগে চলমান গণইফতার কার্যক্রমের ১৫তম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণইফতারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাপ এর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা। গণইফতারে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামি আন্দোলন এর শুরা সদস্য মামুনুর রশীদ খান, এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন ও সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুর রব জামিল।

Advertisement

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোখলেছুর রহমান আরও বলেন, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য এই গণইফতার আয়োজনের জন্য আমি এবি পার্টিকে ধন্যবাদ জানাই। অধিকারভিত্তিক রাজনীতি করে যাচ্ছে এবি পার্টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নতুন এ দলটি রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। বিগত ফ্যাসিবাদের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে এবি পার্টির নেতাকর্মীরা রাজপথে সরব ছিলেন, দেশের যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে এবি পার্টি সবসময় জনসাধারণের পাশে থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবৎ পর্যন্ত যারাই ক্ষমতা এসেছেন শুধু তারাই নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে, জনগণের কিন্তু ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন করেনি। আমাদের জনগণ শুধু চোর বাটপারদের দ্বারা শোষিতই হচ্ছে। আমি আপনাদের মতো মেহনতি ও গরিব মানুষের সাথে ইফতার করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি এবং রাষ্ট্রকে ধনী গরিব বৈষম্য দূরীকরণের আহ্বান জানাই। যাকাত হচ্ছে মেহনতি মানুষের অধিকার, হসপিটালগুলোকে গরিব রোগীদের প্রতি সদয় হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, বৈষম্য থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষা-দীক্ষা চাকরি সবক্ষেত্রেই আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছিলো। যার ফলশ্রুতিতে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র পাই। কিন্তু সেই ৭১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ঠিক একই কায়দায় বৈষম্য চলছেই। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ এ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আবার নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের আলোকে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজাতে হবে, যেন নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিবাদ তৈরি না হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে আলতাফ হোসেন রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণ করার তাগিদ দিয়ে বলেন, এবি পার্টি সৃষ্টির লগ্ন থেকেই জনগণের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, সংস্কার বিহীন নির্বাচন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। শুধু নাম একটা নির্বাচনের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি।

Advertisement

গণইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির স্বেচ্ছাসেবা ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, কেফায়েত হোসাইন তানভীর, নারী উন্নয়ন বিষয়কসহ সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, শরন চৌধুরী, সহঃ অর্থ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সহঃ প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ, যুবপার্টির দফতর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, নপল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক আরিফ সুলতানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

এএএম/এমআরএম/জিকেএস