দেশজুড়ে

দর্জিপাড়ায় ঘুম নেই শ্রমিক-কারিগরদের

রাজশাহীর দর্জিপাড়ায় ঘুম নেই শ্রমিক-কারিগরদের। ঈদে নতুন পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক দোকানি।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, সরগমর শহরের সবকটি দর্জিপাড়া। কাপড় কাটার টেবিল, সেলাই মেশিনের খটখট শব্দ, আর সুই-সুতার কাজে ব্যস্ত কারিগর-শ্রমিকরা। পাঞ্জাবি, কুর্তা, শাড়ি, লেহেঙ্গা, গাউন সব ধরনের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এক্সপ্রেস সার্ভিসের জন্য অনেকে বাড়তি টাকা দিয়ে দ্রুত পোশাক বানিয়ে নিচ্ছেন।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাপড় কাটা, সেলাই ও কারুকাজ। ১৪ রমজানের পর থেকে দর্জিরা পুরোপুরি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে ১০-১৪ রমজানের মধ্যে অধিকাংশ দোকান অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। এখন কাজের চাপ অনেক বেশি। দর্জিরা দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করছেন।

রাজশাহীর কাপড় পট্টি ও সাহেব বাজারের দর্জিরা জানান, এখানকার দর্জিদের আলাদা খ্যাতি রয়েছে। পাশের জেলা নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া থেকেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানে পোশাক তৈরি করাতে আসেন।

Advertisement

মো. মামুন নামে এক দর্জি বলেন, ঈদের আগে ঘুমানোরও সময় নেই। সবাই চায় তাদের পোশাক সময়মতো হাতে পেতে, তাই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। চাঁদ রাত পর্যন্ত তাদের ব্যস্ততা থাকবে। এরপর কিছুটা স্বস্তি মিলবে। তবে তাদের পরিশ্রমের ফল হাজারো মানুষের ঈদের আনন্দে ফুটে উঠবে।

দর্জি দোকানের মালিক মো. আমীর আলী বলেন, বাচ্চাদের ও বড়দের সব ধরনের পোশাক তৈরি করছি। ঈদের মৌসুম ভালোই যাচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার কাজের চাপ বেশি। শবে বরাতের পর থেকে দোকানে অর্ডারের লাইন লেগে গেছে।

রাজশাহী সাহেব বাজারে দর্জি দোকানের মালিক ইসমাইল হোসেন বলেন, এবার আনে কাজের চাপ। এরমধ্যে দর্জিরা অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদেরও অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এবার বিশেষ করে থ্রি-পিস, শাট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও হিজাবের চাপ বেশি।

তিনি অরও বলেন, প্রতিটি থ্রি-পিস বানাতে আমার নিচ্ছি ৭০০ টাকা। এছাড়াও শাট ৬০০, প্যান্ট ৬০০, পাঞ্জাবি ৭৫০ টাকা। আলাদা ডিজাইনের বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। তবে খরচ আগের মতই আছে।

Advertisement

নগরীর শিরোইল এলাকার বাসিন্দা সুমন আলী বলেন, ঈদে মেয়ের জন্য জামা বানাতে এসেছি। এখন এসে শুনি অর্ডার না কী নিচ্ছে না। পাশের একটি দোকানে পরিচিত ছিল তিনি নিলেন কিন্তু অনেক বেশি টাকা ধরলেন। তিনটি থ্রি-পিস বানাতে মজুরি নিয়েছে আড়াই হাজার। গত বছরও এ মজুরি ছিল দেড় হাজার থেকে ১৮০০ টাকা।

একই কথা বলছেন নগরীর লক্ষ্মীপুর থেকে আসা নাসরিন বেগম। তিনি বলেন, এবার দর্জিরা অনেক আগে থেকে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ/জিকেএস