১৩ মার্চ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে সুন্দরবনের কটকা এলাকায় শিক্ষা সফরে গিয়ে মর্মান্তিক নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের ৯ শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই শিক্ষার্থী। সময়ের পরিক্রমায় ২১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আজও তাদের হারানোর বেদনায় শোকাভিভূত।
Advertisement
২০০৪ সালের ১৩ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের একদল শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে সুন্দরবনের কটকায় যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের এক মুহূর্তেই আনন্দ রূপ নেয় চরম ট্র্যাজেডিতে। নদীর উত্তাল ঢেউ তাদের নৌকাকে গ্রাস করে নেয়। মুহূর্তে নিভে যায় ১১টি তাজা প্রাণের দীপশিখা।
প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীরা হলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরনাজ রিফাত রূপা, মো. মাহমুদুর রহমান, মাকসুমুল আজিজ মোস্তাজী, আব্দুল্লাহ হেল বাকি, কাজি মুয়ীদ বিন ওয়ালী, মো. কাওসার আহমেদ খান, মুনাদিল রায়হান বিন মাহবুব, মো. আশরাফুজ্জামান এবং মো. তৌহিদুল এনাম।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামিউল ও শাকিল।
Advertisement
প্রতি বছর ১৩ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়। এ বছর ও যথাযথ মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নানা কর্মসূচি নেওয়া হবে।
দিবস উপলক্ষে সকালে কালো ব্যাজ ধারণ, শোক র্যালি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। এছাড়া শোকসভা, স্মৃতিচারণ, দোয়া মাহফিল এবং এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতারের আয়োজন করা হয়।
প্রতিবছর দিনটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে শোকার্ত করে তোলে। এটি শুধু এক দিনের আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং তরুণদের জন্য একটি শিক্ষাও বটে। জীবন কতটা অনিশ্চিত আর নিরাপত্তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আশা করেন, ভবিষ্যতে শিক্ষা সফর বা ভ্রমণের সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, যাতে আর কোনো শিক্ষার্থীকে এমন মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হতে না হয়। শোককে শক্তিতে পরিণত করে নিরাপদ শিক্ষা ও ভ্রমণের প্রতি সচেতনতা গড়ে তুলতে আজকের এ শোকাবহ স্মরণ।
Advertisement
আরএইচ/জিকেএস