জাতীয়

অযোগ্য ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার পেয়েছিল রেলের ৩০ হাজার কোটির কাজ

গত সরকারের আমলে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকার পরও বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্পে ৩০ হাজার কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ এককভাবে পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

Advertisement

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, বুধবার কোম্পানিটির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে পাওয়া কাগজপত্রে প্রাথমিকভাবে এর প্রমাণ পাওয়ার গেছে।

প্রধান কার্যালয় থেকে যাওয়া অনুসন্ধান দলের অভিযান শেষে দুদক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রেলওয়ের অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার বাস্তবায়ন করছে এমন কিছু প্রকল্পের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চিনকি আস্তানা-আশুগঞ্জ রেলপথ সংস্কার, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ, কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ এবং আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।

প্রাপ্ত কাগজপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনা করে সংস্থাটি জানায়, ২৯৯ কোটি টাকার চিনকি আস্তানা-আশুগঞ্জ প্রকল্পে ঠিকাদারের কাছ থেকে বিশেষ অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল- বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ, ১১০ কোটি টাকার সমপরিমাণ কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং ৪০ কোটি টাকার বার্ষিক টার্নওভার।

Advertisement

অন্যদিকে প্রায় ৬২৮ কোটি টাকার কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ঠিকাদারের কাছে বিগত ১০ বছরে একই প্রকৃতির ২০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের দুটি চুক্তি, যার মূল্যমান ৩০০ কোটি টাকা এবং যেকোনো তিন বছরে ৩০০ কোটি টাকার বার্ষিক টার্নওভারের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা

দুদক জানায়, এ দুটি প্রকল্পে এককভাবে কাজ পায় ম্যাক্স। যদিও কোম্পানিটির প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ছিল না। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দুদকের কর্মকর্তারা বলেন, যেসময় ম্যাক্স কার্যাদেশ পায়, তখন তাদের আর্থিক যোগ্যতা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ছিল না।

দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুসন্ধান দলের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের মালিকানাধীন ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে ‘অনৈতিকভাবে’ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এছাড়া আখাউড়া-লাকসাম এবং দোহাজারী-কক্সবাজার প্রকল্পসহ ম্যাক্স গ্রুপের অন্যান্য প্রকল্পের কাগজপত্রও চাওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই ও বিশ্লেষণ শেষে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন’ কমিশনে দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এর আগে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি রয়েছেন কারাগারে। তার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে দুদক অনুসন্ধান শুরু করেছিল।

এসএম/এমএইচআর