রোজার জন্য সাহরি খাওয়া অপরিহার্য নয়। সাহরি না খেলেও রোজা হয়ে যায়। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত সাহরি না খায়, তবুও তার গুনাহ হবে না এবং তার রোজারও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সাহরি খাওয়া নবিজির (সা.) সুন্নত। নবিজি (সা.) নিজে সাহরি খেতেন এবং তার সাহাবিদেরও সাহরি খেতে উৎসাহ দিতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, আপনারা সাহরি খাও। কেননা, সাহরিতে বরকত রয়েছে। (সহিহ মুসলিম: ১/৩৫০)
Advertisement
ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রা.) বলেন, রমজানে একদিন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আমাকে সাহরি খেতে ডাকলেন; বললেন, বরকতময় খাবার খেতে এসো। (মুসনাদে আহমদ)
সাহরি খাওয়াকে মুসলমানদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে নবিজি (সা.) বলেছেন, আমাদের রোজা ও আহলে কিতাব বা পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবের অনুসারীদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। (সহিহ মুসলিম: ১০৯৬)
সাহরিতে কতটুকু খাবার খেতে হবে?আরেকটি বর্ণনায় নবিজি (সা.) বলেছেন, সাহরি খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং আপনারা তা পরিত্যাগ করবেন না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি করুন। যারা সাহরি খায় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। (মুসনাদে আহমদ: ৩/১২)
Advertisement
তাই নবিজির (সা.) অনুসরণ ও বরকত লাভের নিয়তে সাহরি খেয়েই রোজা রাখার চেষ্টা করা উচিত। সুযোগ থাকলে সাহরির বরকত হাতছাড়া করা উচিত নয়। সাহরি পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়, এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরি খাওয়ার সুন্নত আদায় হবে যেমন ওপরে উল্লিখিত হাদিসে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এক/ দুটি খেজুর দিয়েও সাহরি করা যেতে পারে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুমিনের জন্য উত্তম সাহরি হলো হলো খেজুর। (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৪৫)
সাহরি খাওয়ার সময়সাহরি খাওয়ার সময় হল অর্ধরাত্রির পর থেকে ফজরের আগে পর্যন্ত। আর মুস্তাহাব হলো সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময় সাহরি খাওয়া। তবে খেতে খেতেই সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় এত দেরি করা মাকরুহ।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত জায়েদ ইবনে সাবেত তাকে জানিয়েছেন যে, তারা নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সাথে সাহরি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়তে উঠে গেছেন। আনাস বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সাহরি খাওয়া ও আজান হওয়ার মধ্যে কতটুকু সময় ছিল? উত্তরে জায়েদ (রা.) বললেন, পঞ্চাশ অথবা ষাটটি আয়াত পড়তে যতটুকু সময় লাগে।
এখানে আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত গণ্য হবে। আর এই ধরনের ৫০/৬০ আয়াত পড়তে মোটামুটি ১৫/২০ মিনিট সময় লাগে। অতএব সুন্নত হলো, আজানের ১৫/২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া।
Advertisement
ওএফএফ/এএসএম