গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানবিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকা ২০২৫ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই নির্দেশিকা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আদালত সুয়োমটো রুল জারির পাশাপাশি আদেশও দিয়েছেন।
Advertisement
প্ররক্ষা নির্দেশিকা জারির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তাকে আগামী ১৮ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে এ বিষযে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে।
এ সময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানবিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকা ২০২৫ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টকে হেয় করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মানির। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ/বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানবিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকা ২০২৫-এর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওই নির্দেশিকায় বিচার বিভাগকে হেয় করার অভিযোগ এনে আইনজীবী শিশির মনির বিষয়টি নজরে আনার পর স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ২ মার্চ নির্দেশিকা জারি করা হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে যে নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, এখানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ বাকিগুলোর সঙ্গে একইরকম তুলনা করা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতিদের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন নীতিমালা ছাড়া দণ্ডিতদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নিয়ে হাইকোর্টে রুল অনিয়ন্ত্রিত লেজার লাইট ব্যবহার কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্টে রুলতিনি আরও জানান, এসব বিষয়ে আপিল বিভাগ একটি রায় দিয়েছিলেন, সে মামলায় আপিল বিভাগ যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ক্রম) ফিক্স করে দেওয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স আছে তার সব কিছু লঙ্ঘন করে এটাকে জারি করা হয়েছে। এজন্য এই নোটিফিকেশনকে আমরা আদালতের নজরে নিয়ে এসেছি। আমরা আদালতে ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স দেখিয়েছি, আপিল বিভাগে যে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে, সে রায়ের কথা বলেছি। সেই মামলার রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য আছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে কি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা জারি করা হলো, এটা বিস্ময়কর বিষয়। আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে এই ধরনের নীতিমালা জারি করে মূলত বাংলাদেশের সংবিধান ও বিচার বিভাগের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। আমাদের এই কথা শুনে, অন্যান্য সিনিয়র আইনজীবীদের কথা শুনে আদালত একটি সুয়োমোটো রুল ইস্যু করেছেন। রুলে কেন এই নির্দেশিকাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
Advertisement
তিন মাসের জন্য এই নির্দেশিকা স্থগিত করেছেন। আর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে আগামী ১৮ মার্চ আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে তার কন্ডাক্ট, কি কারণে পত্র জারি করেছেন তার আচরণ ব্যাখ্যার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে (সংশোধিত) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারের পর প্রধান বিচারপতির মর্যাদা ক্রম রয়েছে।
এফএইচ/বিএ/এমএএইচ/এএসএম