পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
Advertisement
এর আগে বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তবে বিএসইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের অনুমতি ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভেতরে অবস্থান করছেন।
এদিন সকালে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, আমাদের দাবি অনুযায়ী বুধবারের মধ্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন পদত্যাগ না করায় বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। আমাদের এ কর্মবিরতি বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত চলবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার বিএসইসির কার্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান বা কমিশনার কেউ আসেননি। তবে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যথাসময়ে অফিসে এসেছেন। কিন্তু তারা কোনো কাজ করছেন না। কর্মকর্তাদের ডেস্ক ফাঁকা দেখা যায়। এমনকি কোনো চিঠিপত্রও আদান-প্রদান করা হচ্ছে না।
বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী তারা সবাই কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা অফিসে আলোচনা, কথাবার্তা, ঘোরাঘুরি, গল্প-আড্ডায় সময় পার করছেন। এছাড়া বুধবার লাঠিচার্জে যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন বিএসইসি ঘেরাও, বিশেষ নিরাপত্তায় কার্যালয় ছাড়লেন চেয়ারম্যান উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তারা চেয়ারম্যান-কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে: বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগ না করলে কর্মবিরতিতে যাবেন বিএসইসি কর্মকর্তারাবুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা তৈরি আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ— কমিশনারদের খারাপ আচরণ, বিভিন্ন কোম্পানির তদন্তের আলোকে কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক শোকজ করা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা।
তিনি বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানাই। তবে তারা এ দাবি মেনে নেননি বরং সেনাবাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে ডেকে এনে তারা আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর লাঠিচার্জ করিয়েছেন। এতে আমাদের ছয়জন কর্মী আহত হয়েছেন।
Advertisement
মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। তাই আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এখানে (বিএসইসি) যোগ্য ও অভিজ্ঞ বসানো হোক। বাংলাদেশ ব্যাংকে যেমন অভিজ্ঞ অভিভাবক দেওয়া হয়েছে, আমরাও তেমন অভিভাবক চাই। যে অভিভাবক তাদের নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা সম্ভব না।
এমএএস/বিএ