দেশজুড়ে

বাজারে নেই বোতলজাত সয়াবিন তেল, একে অপরকে দুষছে ব্যবসায়ী-কোম্পানি

কুড়িগ্রামে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। দুয়েকটি দোকানে আধা লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও দাম অনেক চড়া। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অন্যান্য পণ্য না নিলে বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো তেল দিচ্ছে না। এতে সংকট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, খোলা তেলে লাভ বেশি হওয়ায় দোকানিরা বোতলের তেল খুলে বিক্রি করছেন।

Advertisement

বিক্রেতাদের অভিযোগ, কোম্পানিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট পরিবেশকদের কাছে তারা বারবার তাগিদ দিয়েও বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ পাচ্ছেন না। ক্রেতারা এলে তাদের খোলা তেল সরবরাহ করতে হচ্ছে। প্রথমে আপত্তি করলেও কয়েক দোকান ঘুরে অবশেষে খোলা তেল কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা।

কুড়িগাম শহরের আদর্শ পৌর বাজারের ব্যবসায়ী নাঈম ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন থেকেই কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। গ্রাহকরা বারবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাবি করলেও দিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে গ্রাহকরা খোলা তেল নিয়ে ফিরছেন। এছাড়া কোম্পানিগুলো বোতলজাত তেল দিতে নানা শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। এক কার্টন তেল নিতে এক বস্তা প্যাকেট চাল, আটা কিংবা সরিষার তেল নেওয়ার শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। এসব শর্ত দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব না।’ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, তীর, রূপচাঁদা, ফ্রেশ এবং পুষ্টি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা (এসআর) বোতলজাত তেলের সঙ্গে চাল, আটা ও সরিষার তেল নেওয়ার শর্তে বোতলজাত সয়াবিন সরবরাহ করতে চাচ্ছেন। রাজি হলে দুই কার্টুনের বেশি তেল দিতে চান না তারা। ফলে গ্রাহকরা বোতলজাত সয়াবিন পাচ্ছেন না।

পৌর বাজারের মুদি দোকানি আয়নাল হক বলেন, ‘কোম্পানির অন্য পণ্য নেওয়ার শর্ত ছাড়া বোতলজাত সয়াবিন মিলছে না। তাদের শর্তের জালে দোকানদাররা জিম্মি। ডিলারদের ফোন দিলে বলছেন তেল নাই।’

Advertisement

পৌর বাজারে তেল কিনতে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রমজান মাস এলেই জনগণের ভোগান্তি বাড়ে। জিনিসের দাম বেশি, সঙ্গে সংকটও তৈরি হয়। ইফতারসহ রান্নার কাজে সয়াবিন তেলের ব্যবহার বেশি হয়। সব পরিবারে একই রকম। কিন্তু বোতলের তেল কোথাও নেই। খোলা তেল নিয়ে বাড়ি ফিরছি।’

রূপচাঁদা কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি সাব্বির বলেন, ‘আমরা তেল পাওয়া মাত্র বাজারে ছাড়ছি। সরবরাহ তুলনামূলক কম হলেও আমরা আটকে রাখছি না। জিয়া বাজার, পৌর বাজার, খলিলগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বোতলজাত তেল দিয়েছি। আমার কাছে প্রত্যেকটার বিক্রির স্লিপ আছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন বাজারে চাহিদাপত্র নিয়েছি। এগুলো সরবারহ করা হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘বোতলজাত সয়াবিনের সংকটের বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আশাকরি দ্রুত এর সমাধান হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন পেশার মানুষকে নিয়ে বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা টিসিবি’র পণ্য পেয়েছি, সেগুলো বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রিও শুরু হয়েছে।’

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, বাজারে কোনো ধরনের কারচুপি, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবসায়ীদের আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

এমএন/এমএস