দেশজুড়ে

বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস না করায় মৎস্য কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে হট্টগোল করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদেরকে জিজ্ঞাসা না করে কেন গরু বিতরণ করা হচ্ছে, এ অভিযোগ তুলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনকে লাঞ্ছিত করেন তারা।

Advertisement

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় পূর্বের তালিকাভুক্ত ৮০ জন জেলের মাঝে একটি করে গরু বিতরণ করা হয়। সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদ। তিনি ৪৮টি গরু জেলেহের হাতে হস্তান্তর করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। পরে উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক, উপজেলা কমিটির সদস্য খোকন প্যাদা, চাঁদপাশা ইউনিয়নের রুবেল সরকার, রাজগুরু এলাকার নান্টু জমাদ্দারসহ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হন। তারা মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিএনপির আরও অনেককে এনে পরিস্থিত উত্তপ্ত করে তোলেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত হয়ে বিএনপির এক নেতা বাবুগঞ্জ মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনকে বলছেন, ‘আমরা এর আগেও শুনেছি যে জামায়াতের লোক নিয়ে আপনি জেলে কার্ড করেছেন। বিএনপির লোক গেলে বলেন চলে যান।’ বিএনপির অপর এক নেতা বলেন,‘গরু দেওয়ার বিষয়ে আমার কাছে জিজ্ঞেস করেনি। আমার এলাকার লোককে বারবার বঞ্চিত করতে পারি না। সে আওয়ামী লীগের লোককে গরু দেয়।’ এ সময় মৎস্য কর্মকর্তা তাদের বসতে বললে চিৎকার করে বিএনপির নেতারা বলেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের লোক, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা।’

Advertisement

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক বলেন, ‘মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী গরু বিতরণ করছিলেন তিনি। তারা সেটা না করার জন্য বলেছেন।’

মৎস্য কর্মকর্তাকে ঘিরে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলার ভিডিও আছে বলার পর ফারুক বলেন, ‘ভিডিওতে যতটুকু দেখেছেন ততটুকুই ঘটনা, এর বেশি কিছু হয়নি।’

জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অহিদুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, ‘কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের লোকজনদের গরু দেওয়ায় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী প্রতিবাদ করেছেন মাত্র।’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনকে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Advertisement

ইউএনও ফারুক আহমেদ জানান, তিনি গরু বিতরণ কর্মসূচি শুরু করে মাঠপর্যায়ের আরেকটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে চলে যান। এরপরে সাংবাদিকেরা তাকে জানিয়েছেন, সেখানে ঝামেলা হয়েছে। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।

শাওন খান/এমএন/এএসএম