জাগো জবস

চোখের দৃষ্টিশক্তির চিকিৎসায় পরিবর্তনের স্বপ্ন গাজী রিয়াজের

চোখ মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেই চোখ এবং দৃষ্টিশক্তির যত্নে ড. গাজী রিয়াজ রহমান হয়ে উঠেছেন পথিকৃৎ। খুলনা থেকে উঠে আসা এই অপ্টোমেট্রিস্ট বর্তমানে দৃষ্টিশক্তির চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক বিশাল পরিবর্তনের প্রতীক। ঢাকা অপটিক্যাল প্যাভিলিয়ন ও দেশের প্রথম আধুনিক মায়োপিয়া সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ড. রিয়াজ কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। শুনিয়েছেন তার যাত্রা, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার গল্প। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—

Advertisement

জাগো নিউজ: মায়োপিয়া সেন্টারের ধারণা দেশে প্রথমবারের মতো কীভাবে শুরু হলো?ড. গাজী রিয়াজ: মায়োপিয়া বর্তমানে একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশেষ করে শিশুরা এ সমস্যায় বেশি ভুগছে। দেশে এর আগে মায়োপিয়ার বিশেষায়িত কোনো কেন্দ্র ছিল না। ২০২১ সালে আমি সিদ্ধান্ত নিই, মায়োপিয়া চিকিৎসার জন্য একটি আধুনিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করবো। এর পেছনে লক্ষ্য ছিল একটি নির্ভরযোগ্য জায়গা তৈরি করা, যেখানে রোগীরা বৈজ্ঞানিক এবং আধুনিক চিকিৎসা পেতে পারেন। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড জেইসের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে এই সেন্টার গড়ে তুলি। এটি রোগীদের জন্য বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

জাগো নিউজ: মায়োপিয়া কী এবং কেন সমস্যাটি দিন দিন বাড়ছে?ড. গাজী রিয়াজ: মায়োপিয়া একটি দৃষ্টিজনিত সমস্যা। যাকে আমরা সহজ কথায় বলি ‘কাছের জিনিস ভালো দেখা যায়, কিন্তু দূরের জিনিস ঝাপসা দেখা যায়’। এর মূল কারণ হলো চোখের আকৃতির পরিবর্তন। বর্তমানে টেকনোলজির অতিরিক্ত ব্যবহার, যেমন- মোবাইল এবং কম্পিউটার স্ক্রিনে দীর্ঘক্ষণ থাকা এবং বাইরের পরিবেশে কম সময় কাটানো মায়োপিয়ার হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।

জাগো নিউজ: মায়োপিয়ার চিকিৎসায় আপনার সেন্টার কী ধরনের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে?ড. গাজী রিয়াজ: আমাদের সেন্টারে প্রথমবারের মতো আমরা ‘মায়োপিয়া কন্ট্রোল মেথড’ চালু করেছি। এখানে অরথোকে লেন্স, মায়োপিয়া কন্ট্রোল গ্লাস এবং স্পেশালাইজড কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি আমাদের সেন্টার একটি ইভিডেন্স-বেসড ট্রিটমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন বিসিএসে শাহরিয়ারের প্রশাসন ক্যাডার জয়ের গল্প  বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেতে যা করবেন 

জাগো নিউজ: তরুণ অপ্টোমেট্রিস্টদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?ড. গাজী রিয়াজ: আমি সব সময় বলি, আমাদের পেশাটি শুধুই একটি চাকরি নয়, এটি একটি দায়বদ্ধতা। একজন রোগী যখন চোখের সমস্যায় ভোগেন; তখন তিনি এক অসীম উদ্বেগে থাকেন। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো তাকে সঠিক সমাধান দেওয়া। আরেকটি বিষয় হলো, কাজকে কখনো ব্যবসা ভাবা যাবে না। রোগীর সন্তুষ্টি এবং আস্থা অর্জন করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

জাগো নিউজ: ঢাকা অপটিক্যাল প্যাভিলিয়নের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?ড. গাজী রিয়াজ: বর্তমানে আমাদের চারটি শাখা আছে এবং শিগগিরই দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আমরা ডোর-স্টেপ ভিশন কেয়ার সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো চোখের সঠিক যত্ন সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া।

জাগো নিউজ: আপনার কর্মজীবনের প্রেরণা কীভাবে পেলেন?ড. গাজী রিয়াজ: আমার শৈশব থেকেই একটি লক্ষ্য ছিল, মানুষকে সাহায্য করার জন্য কিছু করবো। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আমাকে শৃঙ্খলা শিখিয়েছে আর আমার শিক্ষা ও কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা আমাকে দেখিয়েছে কীভাবে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনা যায়। এ প্রেরণাই আমাকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

এসইউ/জিকেএস

Advertisement