রমজানে বাড়তি চাহিদা বেশি থাকায় বেড়েছিল মুরগি, মাছ, মাংস, লেবু, শসা ও বেগুনের দাম। তবে রোজার পণ্য হিসেবে পরিচিত খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম ছিল স্থিতিশীল। কিন্তু দুদিনের ব্যবধানে কমেছে ব্রয়লার মুরগি-লেবুসহ বেশকিছু পণ্যের দাম।
Advertisement
সোমবার (৩ মার্চ) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা রোজা শুরুর আগে শুক্রবার বেড়ে ২২০-২২৫ টাকায় উঠেছিল। অর্থাৎ তিনদিন বাদে আবারও ৩০-৩৫ টাকা কমে আগের দামে এসেছে।
অন্যদিকে, ইফতারে অনেকেই লেবুর শরবতে চুমুক দিয়ে গলা ভেজাতে চান। তবে, এবার চাহিদা থাকায় রোজার শুরুতেই লেবুর দাম ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু আজ আগের তুলনায় লেবুর দামও কিছুটা কম।
শনি ও রোববার (১ ও ২ মার্চ) ঢাকার চারটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হালিপ্রতি লেবু বিক্রি হয়েছে ৫০-৮০ টাকা দরে। সোমবার সেই লেবু ৪০-৬০ টাকা হালি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
Advertisement
লেবু বিক্রেতা বাহাউদ্দিন বলেন, রোজার সময় যে পরিমাণে সরবরাহ থাকে তার চেয়ে চাহিদা কয়েকগুণ বেশি থাকে। তাই দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এখন গত দুদিনে অনেকে লেবু কিনে ফেলেছে, চাহিদা কমছে, সেইসঙ্গে দামও। আরও কয়েকদিন গেলে হালি ২০-২৫ টাকায় নেমে আসবে।
আরও পড়ুন সিলেটে লেবুর হালি ৮০-১৫০ টাকা বোতলজাত সয়াবিন উধাও, লেবু-শসার চড়া দাম ক্রেতার ক্ষোভ: রমজান এলেই লেবু আপেল হয়ে যায়লেবুর মতো দাম বেড়েছিল শসা-বেগুনের। সোমবার শসা কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। আগে দাম ৫০-৬০ টাকা হলেও এখন ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, গোলবেগুন ৮০-১০০ টাকার পরিবর্তে ৬০-৯০ টাকা ও লম্বা বেগুন ৬০-৮০ টাকার পরিবর্তে ৫০-৬০ টাকা দরে এসেছে।
বিক্রেতারা বলেন, দিন যত যাবে দাম তত নাগালের মধ্যে আসবে। বাজারে আহাদুজ্জামান নামের এক ক্রেতা বলেন, আসলে রোজার আগমুহূর্তে ও প্রথম দু-একদিন মানুষ হুমড়ি খেয়ে পণ্য কেনেন। এ কারণে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। এখন আস্তে আস্তে কিনবে, দামও কমবে। আমাদের সবার উচিত যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু কেনা। তাহলে দাম বাড়বে না।
এদিকে মোটাদাগে বলতে গেলে এবছর রমজানে পণ্যের দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে। রোজা শুরুর আগেই বাজারে যে অরাজকতা অন্যান্য বছর দেখা যেত, সেটা নেই। তবে চারমাস ধরে চলা ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট কাটেনি। সেটাই একমাত্র বড় অস্বস্তির কারণ ভোক্তার জন্য। এছাড়া চালের দাম বাড়তি। এবছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ ও আলুর দাম কম রয়েছে।
Advertisement
বিক্রেতারা বলছেন, বেশকিছু পণ্যের ভরা মৌসুম, নতুন সরকারের শুল্ক-ছাড়, পর্যাপ্ত আমদানির কারণে বেশিরভাগ পণ্যে স্থিতিশীলতা আছে। যদিও প্রতি বছরের ন্যায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় বেগুন, লেবু, ধনেপাতার মতো পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, সেটা প্রতি বছর হয়।
সেগুনবাগিচা বাজারে আল্লার দান স্টোরের (মুদি দোকান) মালিক ইছাহাক আলী বলেন, শুধু তেলের সমস্যা না হলে এ বছরের বাজার একদম স্থিতিশীল বলা যেত। বরং গত কয়েক মাসের তুলনায় এখন জিনিসপত্রের দাম কম। কিছু পণ্যের সরবরাহ কমার কারণে ২-১ টাকা কমবেশি হচ্ছে, যেহেতু এখন মানুষ কিনছে বেশি। এটা দু-চারদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।
এনএইচ/এমএএইচ/এমএস