জাতীয়

ইফতারে বনানী-গুলশানের বড় রেস্তোরাঁ ফাঁকা, বেচাকেনা কম

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর অধিকাংশ হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইফতারের বাজারে বেচাকেনা কম দেখা গেছে। পর্যাপ্ত ইফতার তৈরি হলেও ক্রেতা কম। ফুটপাতের ইফতারের দোকানগুলোও তেমন জমে ওঠেনি। বনানী ও গুলশানের রেস্তোরাঁর সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণত রমজানের শুরুর দিকে অধিকাংশ রোজাদার নিজ বাসায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার করেন। এ কারণে আজ সোমবার (৩ মার্চ) রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতা খুবই কম ছিল। আবার পার্সেল বিক্রিও কম হয়েছে। তবে দুই-তিনদিন গেলে রেস্তোরাঁয় ইফতার বিক্রির চিত্র পাল্টে যাবে। তখন অনেকেই রেস্তোরাঁয় আগাম বুকিং দেবেন।

Advertisement

খাবারের দাম ও মানের দিক থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পছন্দের শীর্ষে থাকে বনানীর স্টার কাবাব। সরেজমিনে দেখা যায়, এই রেস্তোরাঁর সামনের এককোণে শামিয়ানা টানিয়ে খাসির হালিম বিক্রি করছেন রেস্তোরাঁটির কর্মীরা। তবে সেখানে ক্রেতা ছিল খুবই কম। মাঝেমধ্যে দুই-একজন হালিম নিতে আসছেন।

 হালিমের দোকানের দায়িত্বে থাকা স্টার কাবাবের বিক্রয়কর্মী মোর্শেদ বলেন, সাধারণত স্টারের হালিমের খুব চাহিদা থাকে। তবে আজ সাধারণ দিনের চেয়েও বেচাকেনা কম। আর যা-ই বিক্রি হয়েছে, তার অধিকাংশ অনলাইন ডেলিভারির মাধ্যমে।

সাধারণ সময়ে বনানী স্টার কাবাবের গ্রাউন্ড ফ্লোরে খাবার খেতেন লোকজন। তবে রমজান উপলক্ষে গ্রাউন্ড ফ্লোরে এখন বড় বড় হাড়িতে বিক্রি হচ্ছে বাহারি রঙের ইফতার। তবে ওপরের ফ্লোরগুলোতে প্রায় সব আসনেই লোকজনকে ইফতার নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।

Advertisement

স্টার কাবাবে খাসির গ্রিলচাপ প্রতি কেজি ১৪০০ টাকা, খাসির লেগ কাবাব প্রতি পিস ৭৫০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট ৭৫০ টাকা, চিকেন ফুল রোস্ট ৪২০ টাকা, চিকেন ঝাল ফ্রাই ৭০০ টাকা, ব্রেইন মাসালা ১১০০ টাকা, খাসির হালিম ১২০ টাকা, মালাই জিলাপি কেজি ৪৫০ টাকা, জিলাপি কেজি ৪০০ টাকা, পেস্তা শরবত প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, লাবাং প্রতি লিটার ২৫০ টাকা, ছোলাবুট প্রতি কেজি ১৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

বনানী ১১ নম্বর রোডের একটি বাড়ির কেয়ারটেকার জহিরুল ইসলাম। বাড়ির মালিকের জন্য তিনি বিভিন্ন প্রকারের ইফতার কেনেন। আলাপকালে জহিরুল বলেন, প্রতিবছর রমজানে তার মালিকের বাসায় যত ইফতার খাওয়া হয়, তার অধিকাংশ স্টার কাবাব থেকে নেওয়া। আজও বাসার জন্য স্টার থেকে ইফতার নিয়ে যাচ্ছি। এখানের খাবারের মান অনেকটাই ভালো।

প্রথম রমজানে ইফতার বেচাকেনা নিয়ে কথা হয় স্টার কাবাবের ব্যবস্থাপক মো. মুসলিম উদ্দিন বাবুর সঙ্গে। আলাপকালে মুসলিম জাগো নিউজকে বলেন, স্টার কাবার ইফতারে বরাবরই ভালো ব্যবসা করে। ইফতারের মান ও দাম নিয়েও ক্রেতারা সন্তুষ্ট। তবে রমজানের শুরুর দিকে হওয়ায় আজ বেচাকেনা কিছুটা কম। আশা করি আগামীকাল থেকে রেস্তোরাঁয় ইফতার পার্টি বাড়বে।

বনানী ১১ নম্বর রোডে হারফি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এ রেস্তোরাঁর ফটকে বাহারি স্বাদের ইফতারের প্যাকেজের পোস্টার টানানো। রেস্তোরাঁর ভেতরে প্রতিটি চেয়ার-টেবিল ফাঁকা দেখা গেছে।

Advertisement

রেস্তোরাঁটির এক কর্মী বলেন, তাদের রেস্তোরাঁর আজ যেসব ইফতার বিক্রি হয়েছে, তার অধিকাংশ ফুড ডেলিভারির মাধ্যমে। ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। তবে দুই-চারদিন পর রেস্তোরাঁয় ইফতারের প্রবণতা বাড়বে।

গুলশান-২ এর ডিআইটি সার্কুলার রোডের সুলতান ডাইনের সামনের ফুটপাতে হরেক রকমের ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। তাদের অধিকাংশ দোকানিই ভাসমান। এসব দোকানে ইফতার সামগ্রী কিনছেন ক্রেতারা। তবে আশপাশের অনেক বড় বড় রেস্তোরাঁই ফাঁকা দেখা গেছে।

গুলশান-২ এর ১১৪ নম্বর রোডের এক অফিসে চাকরি করেন মামুন মোল্লা। অফিসের অন্য সহকর্মীদের জন্য তিনিও ডিআইটি সার্কুলার রোডের দোকান থেকে ইফতার কেনেন। আলাপকালে মামুন বলেন, তাদের অফিসে দুই শিফটে কাজ করেন কর্মীরা। প্রথম শিফট দুপুর ২টায় বাসায় চলে যায়। এখন দ্বিতীয় শিফটে যারা আছেন, সবাই একসঙ্গে ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এমএমএ/এএমএ