নোয়াখালী সদরে স্কুল শিক্ষিকার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবির ঘটনায় শিক্ষা কর্মকর্তাসহ আরও সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। এর আগে ওই মামলায় পাঁচ শিক্ষক ও এক প্রকৌশলীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত।
Advertisement
শনিবার (১ মার্চ) নতুন এজাহার দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদী মামুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, আসামিরা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী হওয়ায় তখন প্রাণভয়ে তাদের আগের এজাহারে নাম দেওয়া যায়নি। এখন কর্মকর্তাসহ সাতজনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে।
নতুন অভিযুক্তরা হলেন- হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল জব্বার (৫৩), সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান (৫৪), অফিস সহকারী নাজিম উদ্দিন (৩৫), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী সোহরাব উদ্দিন (৩৬), হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর সহযোগী সাখাওয়াত হোসেন প্রকাশ সাহাব উদ্দিন (৪৬), উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন (৪১), রাজের হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদার (৪৭)।
Advertisement
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে বাদী ও তার স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না পেয়ে বিভিন্ন মোবাইলে তা ছড়িয়ে দেন। পরে গত বছরের ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন শিক্ষিকার স্বামী মামুন অর রশিদ।
ওই মামলায় ছয়জনকে কারাগারে পাঠান আদালত। তারা হলেন- হাতিয়া উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম (৪০), একই উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও সাময়িক বরখাস্ত হাসান উদ্দিন বিপ্লব (৩৮) এবং সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন (৫৫)।
এরমধ্যে প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম ও শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তাদের সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মামুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধের যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে এজাহার দাখিল করা হয়। বিচারক এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, মামলা দেওয়ার পর থেকে আসামিরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে তারা আমি এবং আমার পরিবারের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেন। এ নিয়ে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/জেডএইচ/এমএস