অর্থনীতি

রমজান শুরুর আগ মুহূর্তে দাম বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের

রমজান সামনে রেখে বাজারে মাছ-মাংসের দাম বাড়ছে। লেবু, শসা ও বেগুনের দামও বাড়তি। তবে রোজার পণ্য হিসেবে পরিচিত খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম এখনো স্থিতিশীল। 

Advertisement

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বৃহত্তর মিরপুর-১ কাঁচাবাজার, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলা বাজার ঘুরে রমজানের পণ্যের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। এসব বাজারে ক্রেতা সাধারণের ভিড় ছিল উপচে পড়া।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামীকাল শনিবার থেকে রমজান শুরু হতে পারে। অন্যদিকে ফেব্রুয়ারির শেষ দিন আজ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তারা প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি বাজার করছেন। এ অবস্থায় অতিরিক্ত চাহিদার কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় পণ্যের সরবরাহ কম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ১৮০-২০০ টাকা ছিল। একইভাবে সোনালি মুরগির দাম বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকা হয়েছে।

Advertisement

বিক্রেতারা বলছেন, রমজানের শুরুতে অনেকে বেশি পরিমাণে মুরগি কিনে রাখেন। যে কারণে এ সময়টাতে চাহিদার সঙ্গে দাম বাড়ার প্রবণতাও দেখা দেয়। 

আরও পড়ুন

রমজানের আগে পণ্যের দাম স্থিতিশীল, সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলে রমজানের আগে ৯ ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে

বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও সহনশীল রয়েছে। প্রতি ডজন কেনা যাচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা এবং খাসি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রমজানের প্রতিদিনের আইটেম ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০৫-১১০ টাকা। একই সঙ্গে খেসারির ডাল ১১০-১২০ টাকা ও মসুর ডাল ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

Advertisement

মিরপুর কাঁচাবাজারের মুদি দোকানি মামুনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ডালজাতীয় পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। আগের বছর রমজানেও এমন দাম ছিল। মাঝে মসুরের দাম কিছুটা বেড়েছিল, এখন সেটা কমেছে।

মাস দুই আগে চিনির দাম উঠেছিল ১২৫-১৩০ টাকায়। এখন তা কিছুটা কমে ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এ বিক্রেতা।

তবে অস্থিরতা রয়ে গেছে সয়াবিন তেলের বাজারে। ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট এখনো কাটেনি। বিভিন্ন দোকান ঘুরে সয়াবিন তেলের দেখা মেলেনি। কয়েক দোকান ঘুরে একটিতে সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও পাঁচ লিটারের গ্যালনের দাম ৮৫০ টাকা চাচ্ছেন দোকানি। অন্যদিকে খোলা সয়াবিনের দাম প্রতি লিটার ২০০ টাকা হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।

আরও পড়ুন

গুদামে খাদ্য লুকিয়ে রাখা যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা ৬ মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি, বাড়তি ভ্যাটে দাম বাড়বে রমজানে

তেল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দিলশাদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, রমজানের আগে সয়াবিন তেলের চাহিদা যখন বেড়ে যায় তখন ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ব্যবসায়ীরা। একটি শক্ত সিন্ডিকেট এই তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ ক্রেতারা।

রমজান ঘিরে বাজারে মুড়ি ও খেজুরের চাহিদাও বাড়ে। বাজারে এখন প্রতি কেজি মুড়ি ৯০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরও এমন দাম ছিল বলে জানান বিক্রেতারা। চিড়া প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, নরম গুড় ১৮০ টাকা ও শক্ত গুড় ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আমদানি করা ফলের মধ্যে খেজুরের চাহিদা রমজান মাসে অনেকটাই বেড়ে যায়। সাধারণ মানের খেজুর কেজিপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা এবং ভাল মানের খেজুর ৭০০-১৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

রমজানে শরবত তৈরির জন্য লেবুর চাহিদাও বাড়ে। ফলে বাজারে এখন কিছুটা বাড়তি দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি শরবতি লেবু ৭০ টাকা এবং অন্যান্য লেবু ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শশা প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা ও গাজর ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে।

এসআরএস/এমকেআর