আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড এই তিন মার্চেন্ট ব্যাংকের মার্জিন ঋণ, নেগেটিভ ইক্যুইটি, প্রভিশনসহ সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
পরিদর্শন কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো অসঙ্গতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিদর্শন কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসির জারি করা আদেশ তিনটি ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
গঠিত পরিদর্শন কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান এবং সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম।
জানা গেছে, পরিদর্শন কমিটি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এজন্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশন বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশনের ঘাটতি এবং মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ আরও বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে।
আরও পড়ুন মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১২ শতাংশ মার্জিন ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখার সময় বাড়লো মার্জিন ঋণের বিপরীতে প্রভিশনে সময় চায় বিএমবিএবিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন।
Advertisement
তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বিধিমালা, ১৯৯৬ এর বিধি ৩২ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন তিনজন কর্মকর্তাকে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পরিদর্শন করার জন্য নিয়োগ দিয়েছে। পরিদর্শক কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবেন।
পরিদর্শন কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে
পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে গঠিত পরিদর্শন কমিটি তিনটি মার্চেন্ট ব্যাংকের মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, প্রকৃত নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অনুমতিবিহীন লেনদেন শনাক্ত করা এবং এর কারণ চিহ্নিত করা, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ কেন বাড়ছে তা চিহ্নিত করা, এজন্য কারা দায়ী তা চিহ্নিত করা।
এছাড়া, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে- সেটার কারণ চিহ্নিত করা। সেই সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর এ সংক্রান্ত কি কি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করতো তা চিহ্নিত করা। ২০১৬ সাল থেকে একাধিকবার সময় চেয়েও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে- তা চিহ্নিত করা। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যকোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকলে সেটাও চিহ্নিত করা।
এমএএস/এমআরএম