আকিকা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মেয়েকে মারধর করায় জামাইয়ের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, ভাড়া করা লোক দিয়ে জামাতার বাড়িতে এই হামলা করান শ্বশুর। তবে শ্বশুরপক্ষের লোকজন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলেন, সদ্য সিজার হওয়া তাদের মেয়েকে মারধর করেন জামাতা। এতে প্রতিবাদ জানালে তাদের অপমান করা হয়। এ নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।
Advertisement
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিনাজপুরের বিরামপুরে কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা হলেন- সুমন হোসেন ও তার বাবা সোলায়মান হোসেন, মা আকতারা বেগম, ছোট বোন উম্মে হাবিবা, মামা রাশেদুল ইসলাম ও আবু সাঈদ।
পাল্টা হামলায় সুমনের শ্বশুরপক্ষের অন্তত চার সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন সুমনের শ্যালিকা ইয়াসমিন আক্তার ও তার বন্ধু হাবিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম ও আল রিমন।
জামাতা সুমন (২৫) কেশবপুর গ্রামের মো. ছলেমান হোসেনের ছেলে এবং সুমনের শ্বশুর অছিম উদ্দিন পৌর শহরের হাবিবপুর এলাকার বাসিন্দা।
Advertisement
জামাতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে সুমনের সন্তান হয়। ফলে ছোট্ট পরিসরে আকিকার আয়োজন করতে শুক্রবার বিকেলে দুটি ছাগল কেনা হয়। বিষয়টি সুমনের স্ত্রী মোবাইলে বাবাকে জানান। এসময় শ্বশুরের পরিবারের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানকে বড় করে আয়োজন করার দাবি জানানো হয়। জামাইয়ের সামর্থ্য না থাকায় ছোট করে অনুষ্ঠান হবে এমন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সুমন তার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন।
সুমন বলেন, স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার বিষয়টি শ্বশুর জানলে তৎক্ষণাৎ ৩০-৩৫ জন লোক ভাড়া করে নিয়ে এসে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
একপর্যায়ে প্রতিবেশীরা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানান। এছাড়া মসজিদের মাইকে গ্রামবাসীদের একত্র হয়ে তাদের প্রতিহতের জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন গ্রামবাসীরা ধাওয়া দিয়ে তিন যুবককে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে মুচলেকা নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে।
কেশবপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. গোলাপ হোসেন বলেন, হাবিবপুর ও বিরামপুর পূর্বপাড়ার কিছু লোক গ্রামে হামলা করেন। গ্রামের লোকজন আমাকে মসজিদের মাইকে তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়ার কথা বললে আমি মাইকে ঘোষণা করি।
Advertisement
সুমনের শ্বশুর মো. অছিম উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ের চারদিন হলো সিজার হয়েছে। আগামীকাল নাতির আকিকা। তখন মেয়ে ফোন করে বলেছে জামাই আকিকার জন্য দুটা ছাগল কিনেছে। আমি বলি আর কিছু টাকা দিয়ে মাংস কিনে বড় করে অনুষ্ঠান করা যায় কি না। এটা বলায় তারা স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া লাগে। আমি দেখতে এলে তারা (জামাতা) আমাকে অপমান এবং মারধর করে। পরে আমার ছেলের বন্ধুরা এলে এ ঘটনা ঘটে।
মুকুন্দপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, জামাইয়ের বাড়িতে শ্বশুরের এমন ঘটনা দুঃখজনক।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে ভালো আছেন। তবে কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি।
মো. মাহাবুর রহমান/জেডএইচ/এএসএম