সোনারগাঁ বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে লামিয়ার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তার মামির বিরুদ্ধে। প্রয়াত অভিনেত্রী দিতির বসতবাড়ি নিয়ে ভাই-বোনের দ্বন্দ্বের জেরেই তার মেয়ের ওপর এই হামলা। আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) শনিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে প্রয়াত অভিনেতা সোহেল চৌধুরী ও দিতির মেয়ে লামিয়া চৌধুরী এসব অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
জানা গেছে, সোনারগাঁ পৌরসভা এলাকায় অভিনেত্রী দিতিদের বসতবাড়ি। সেখানে তার ভাই ও বোনরা বসবাস করেন। তাদের বসতবাড়ি ও আশপাশের সম্পত্তি নিয়ে দিতির সঙ্গে তার ভাই টিপুর বেশ কয়েক বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। দিতির ভাই টিপুর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী প্রীতি কয়েক দফা জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে টিপুর স্ত্রী স্থানীয় বিএনপির ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে ফের জমি দখলের চেষ্টা চালান। সেসময় দিতির আরেক ভাই আনোয়ার, বোন ও তার মেয়ে লামিয়া বাধা দেন। এ সময় দখলদাররা লামিয়ার গাড়িতে হামলা চালিয়ে কাচ ভেঙে ফেলে। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে লামিয়ার পায়ে ইটের আঘাত লাগে।
লামিয়া চৌধুরী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে নিজের ওপর হামলাকারীদের ছবি দেখান লামিয়া। তাদের পরিচয় না জানলেও এই ব্যক্তিরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
Advertisement
বিএনপি নেতাকর্মীদের দ্বারা হামলার সত্যতা জানতে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনা জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) আসিফ ইমাম জানান, আমি হামলার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।
কদিন আগে বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে ছেলেমেয়ের ভাগ প্রসঙ্গে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন লামিয়া। মা-বাবার সম্পদ দুই ভাইবোনের মধ্যে সমান ভাগে বণ্টন করা হয়েছে। অভিনেত্রী রুনা খানের সেই পোস্ট ধরে তিনি লিখেছিলেন, ‘এটাই তো স্বাভাবিক হওয়া উচিত। আমার আর আমার ভাইয়ের মধ্যেও সব সমান সমান। আমাদের বাবা-মা এটাই চেয়েছিলেন। আর আমাদের এ শিক্ষা দিয়েই বড় করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত আইন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা সমান না। আর শুধু শুধু সবকিছু জটিল করে আমাদের সময় নষ্ট করে। বাড়তি সময় ও কাগজপত্র নষ্ট।
সোহেল চৌধুরী, লামিয়া, সাফায়েত ও দিতি। ছবি: সংগৃহীত
সেখানে লামিয়া দাবি করেন, ‘মা স্পষ্ট বলে গেছেন যে, আমরা সমান। আর এগুলো আমিই দেশে থেকে দেখভাল করি। অথচ আমারই এ রকম শুনতে হয় যে, আমার মূল্যায়ন অর্ধেক। এসব ঠিক নয়। ইসলাম ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত। এই আইনের পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে। কিন্তু আগের সমাজ ও এখনকার সমাজ এক নয়। আগেকার দিনে নারীদের কম দেওয়া হতো। কারণ বিবাহিতার ব্যয় স্বামী বহন করত। আর অবিবাহিতাদের খরচ ভাই বহন করত। এখন এ রকম হয় না। মেয়েরা এখন ভাইদের ওপর নির্ভরশীল নয়। আমি অবিবাহিত বলে আমার অর্থনৈতিক দায়িত্ব আমার ভাইয়ের না। বরং এখন স্ত্রী/বোনেরা সংসারের খরচ ভাগ করে নেয়। তাহলে কেন এখনো এই বৈষম্য অব্যাহত?
Advertisement
ওই পোস্টে লামিয়া দাবি করেন, ‘এ ধরনের আইনগুলো সংস্কার করা উচিত এবং অন্ততপক্ষে এমন পরিবারগুলোতে বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়, যারা এই বৈষম্যে একমত না। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাদের সমান করে বড় করেছেন। ভাইও আমাকে সমানই ভাবে। শুধু আপনারা আমাকে ছোট করছেন।’
আরও পড়ুন: ‘আমার পাশে কি কেউ নেই?’, কী হয়েছে দিতিকন্যা লামিয়ার
আরএমডি/এএসএম