রাজধানীর মিরপুরের একাধিক বাসায় ও দোকানে তালা কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Advertisement
শনিবার (২২ফেব্রুয়ারি) মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছেদুর রহমান এসব তথ্য জানান।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মিরপুর-১০ নম্বর এ ব্লকের তিনটি দোকান ও ৫ নম্বর সড়কের দুটি বাসায় এই চুরির ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে এই চোর চক্রের অভিযান।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার ভোর ৪টা ২০ মিনিটের দিকে মিরপুর-১০ নম্বরের এ ব্লকের ২০ নম্বর লাইনে ‘মা মনি’ স্টোর নামে একটি দোকানের সামনে দামি প্রাইভেটকার থেকে এক এক করে তিন ব্যক্তি নেমে আসেন। এরপর দোকানে তালা কাটা শুরু করেন। তালা কাটা শেষে দোকানের সামনে থেকে চলে যান। কয়েক মিনিট পর আবার একই গাড়িতে ওই দোকানের সামনে আসেন তারা। এরপর সাটার খুলে ক্যাশবাক্স, সিগারেটের প্যাকেটসহ একে একে অনেক মালপত্র বের করে প্রাইভেটকারে তোলেন।
Advertisement
আরও পড়ুন
চলন্ত বাসে ডাকাতির ভয়ংকর বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা দায়িত্ব অবহেলায় এবার এএসআই বরখাস্তচক্রের তিন সদস্যের একজনের পায়ে কেডস ও পরনে সবুজ স্যুট ছিল। একজন প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে আশপাশে ভালো করে দেখে নেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা অন্য দুই সঙ্গী দোকানে ঢুকে একে একে সব মালপত্র বের করে নিয়ে আসেন। এ সময় তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল।
ডিসি মাকছেদুর রহমান বলেন, আমরা সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে কাজ করছি। আসামি শনাক্তে কাজ চলমান। এগুলো ডাকাতি নয়। সেখানে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, যারা ভুক্তভোগী, আমরা তাদের এজাহার দিতে বলেছি। আমরা মামলা নেবো। তাদের এক/দুজন এসেছেন। মামলাও হয়ে গেছে। যেহেতু ভোরের ঘটনা, সেহেতু আমরা এখনো কাউকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পারিনি। আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। আশা করি শিগগির আসামিদের গ্রেফতারের আওতায় নিয়ে আসবো।
Advertisement
মা মনি স্টোরের মালিক আরমান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে দোকানে এসে দেখি সাটার লাগানো। তবে তালা ভাঙা। ক্যাশবাক্সসহ অনেক মালপত্র উধাও। একইভাবে আরিফুল ইসলামের একটি পাঞ্জাবির দোকান, রুবেলের ‘সালমান বিরিয়ানি’ হাউজ ও ৫ নম্বর সড়কের দুটি বাসায়ও একই ধরনের চুরির ঘটনা ঘটে।
দোকানে চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সালমান বিরিয়ানি হাউজের মালিক রুবেল। এই সঙ্গে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ২৮ বছর ধরে একই ঠিকানায় দোকান করছি। এই ধরনের দুর্ধর্ষ ঘটনা কখনো ঘটেনি। নগদ টাকাসহ দেড় লাখ টাকার মালপত্র নিয়ে গেছে। দোকানের সামনের একটি ভবনের দোতলায় আমার বাসা। রাত সোয়া ১২টার দিকে দোকান বন্ধ করে যাই। যে কায়দায় দোকানে চুরি করেছে তা অবিশ্বাস্য। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। জড়িতরা শনাক্ত হোক। প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। মিরপুরে যেখানে আমার দোকান সেখানে ৩–৪টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে। পাশে বেনারশী পল্লি। সেখানে যদি এরকম অবস্থা হয়, কোথায় কে নিরাপদ? পুলিশের টহলও দেখি না। আমরা কিছু চাই না। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
কেআর/ইএ/এমএস