‘বাংলাদেশ শুধু একটি ভাষার আবাসস্থল নয়। ভিন্ন ভিন্ন অন্তত ৪০টি ভাষার অস্তিত্ব রয়েছে। প্রতিটি ভাষারই সংস্কৃতিতে অবদান রয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক নৃগোষ্ঠীর ভাষা আজ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। এসব ভাষা সংরক্ষণে কার্যকর নীতিমালা করা জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকারকে সেদিকে নজর দিতে হবে।’
Advertisement
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (আমাই) আয়োজিত ‘বহুভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রধান সুজান ভাইস। মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম।
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, বহুভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বহুত্ববাদী সমাজের ভিত্তি তৈরি করে। যখন একাধিক ভাষা সহাবস্থান করে প্রতিটি ভাষা তার সঙ্গে ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্পরচনা, লোককাহিনী বহন করে, যা অন্যদের সমৃদ্ধ করে। তবে বিশ্বায়ন, নগরায়ণ এবং মাতৃভাষায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব বিশ্বব্যাপী অনেক ভাষার পতনের দিকে পরিচালিত করেছে। আমাদের এমন নীতি গ্রহণ করতে হবে, যা বহুভাষা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা করে।
Advertisement
আরও পড়ুন
মাতৃভাষার জন্য জীবন দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন যে ভাষা টিকে আছে দুই বোনের মুখেতিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা, সমান সুযোগ নিশ্চিত করা ও বিদ্যমান সব সাংস্কৃতিক পরিচয়কে সম্মান করে এমন ধারণাকে সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুজান ভাইস বলেন, ভাষা সাংস্কৃতিক পরিচয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখা এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষায় পাঠদান করা হলে শিক্ষার্থীদের শেখার ফলাফল ইতিবাচক ও শক্তিশালী হয়। বহু ভাষা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও সামাজিক সম্প্রীতির ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।
দিনব্যাপী সেমিনারে চারটি অংশে চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এতে ‘বহুভাষা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ’ নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন ডেভিড এ পিটারসন।
Advertisement
‘ভাষাগত বৈচিত্র্যের দেশে বহুভাষা’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এম সাজ্জাদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ইবরাহিম হোসেন ‘বহুভাষা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক শ্রেণিকক্ষে ইংরেজি পাঠদান’ বিষয়ে এবং একই ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী ‘সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং প্রসারে বহুভাষার ভূমিকা’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এএএইচ/ইএ