বিনোদন

বাংলা ভাষার সংকট প্রসঙ্গে যা বললেন পরমব্রত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষ নিজের ভাষার কথা বিভিন্নভাবে স্মরণ করছেন। সবাই গাইছেন নিজ নিজ ভাষার জয়গান। টালিউড তারকা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও মাতৃভাষা নিয়ে কথা বলেছেন। জানিয়েছেন বাংলা ভাষা নিয়ে তার চিন্তার কথা। তুলে ধরেছেন সংকট ও সম্ভাবনার কথা।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে পরমব্রত বলেন, ‘বার বার প্রশ্ন ওঠে বাংলা ভাষা সংকটে রয়েছে কি না। আমি বলব, প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষাই কিন্তু সংকটে। আসলে প্রযুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে। হাতের কাছেই রয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম। এর প্রভাবে একাধিক ভাষা মিলিয়ে-মিশিয়ে কথা বলার প্রবণতা বেড়েছে। এর ফলে প্রায় বিশ্বের সব ভাষাই এখন সংকটে। এর চেয়ে একটা প্রশ্ন আমার মাথায় বার বার এসেছে— আমরা কি কোনো ভাষাই আসলে ঠিক করে শিখছি?’

বাংলা ভাষার সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে এ অভিনেতার ভাষ্য, ‘মাতৃভাষা নিয়ে একটা দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে আমার। মাতৃভাষা সঠিকভাবে বলতে না পারলে অন্য কোনো ভাষাই শেখা সম্ভব নয়। তবে বাংলা ভাষার সামনে বিরাট সংকট, এমনটাও আমি মনে করি না। কেউই আর বাংলা ভাষা শিখছে না, এমনও নয়। যদিও এটা সত্যি, আমাদের প্রজন্মের পরে অর্থাৎ নব্বইয়ের দশকে বা এ দশকের শেষের দিক থেকে যারা জন্মেছে, তারা প্রবলভাবে “খিচুড়ি” ভাষার মধ্যে বড় হয়েছে। তাদের মাতৃভাষা আসলে কোনটা, সেটা তারা নিজেরাও জানে কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা হয়তো বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি মিলিয়ে মিশিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্তু ওদের লেখা পড়লে বোঝা যায়, ভাষার উপর ওদের দখল কতটা রয়েছে।’

আরও পড়ুন ‘জীবন থেকে নেয়া’ নির্মাণে বাধা দেওয়া হয়েছিল জহির রায়হানকে  শ্রাবণী শর্মার কণ্ঠে একুশের গান 

প্রযুক্তির এই সময়ের কথা ইন্টারনেটের যুগে ভাষার প্রয়োগ নিয়ে পরমব্রত বলেন, ‘ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ভাষার প্রয়োগ দেখতে পাচ্ছি। যার ফলে মনে হয়, সব ভাষাই এখন সংকটে। ইন্টারনেটে হয়তো অন্য ধরনের ভাষায় কথা বলায় স্বাচ্ছন্দ মানুষ। কিন্তু লেখার ক্ষেত্রে বা সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে ভাষার সঠিক প্রয়োগ জরুরি। তার মানে এই নয়, সাধু ভাষায় লিখতে হবে। চলিত বাংলা ভাষায় লিখলেও সেটায় যেন যত্ন থাকে। সেটা যেন ইন্টারনেটের ভাষা না হয়ে যায়। আসলে বিবর্তন ও অবলুপ্তি এক জিনিস নয়। আজ থেকে ১০০ বছর আগে অন্য ধরনের বাংলায় কথা বলত মানুষ। আজ সেটা হয় না খুব স্বাভাবিকভাবেই।’

Advertisement

এমএমএফ/জিকেএস